ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত মরণ ঘাতক জ্বর। সারাবিশ্বে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৯ কোটি লোক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। আমাদের দেশে প্রতিবছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেক লোক মারা যায়। এ জ্বরে আক্রান্ত ব্যাক্তির শরীরে সাধারণ জ্বরের মত অনুভূত হলেও এই ভাইরাল ইনফেকশন খুবি মারাত্মক। এর কোন সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো আবিষ্কৃত হয় নি।
তথ্য সূচী দেখুন
Toggleডেঙ্গুকে ঘাতক জ্বরও বলা হয়। এই জ্বরের ভাইরাস বা জীবাণু সরাসরি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে যেতে পারে না। জ্বরে আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্তে থাকা জীবাণু মশার মাধ্যমে আশে পাশের অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করলে তারও ডেঙ্গু জ্বর হয়।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ সমূহঃ
এই জ্বরে আক্রান্ত ৮০% লোকের শরীরে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অপরদিকে মাত্র ৫% লোকের শরীরে তীব্র লক্ষণ দেখা যায়। রোগীর শরীরে রক্তমোক্ষণ (Bleeding) হয় এবং রক্তে প্লেটেলেট (Platelet) কমে যাওয়ার তীব্র আশকা থাকে। সাধারণত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৪-৬ দিনের মধ্যে নিচের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
- হঠাত অনেক জ্বর হওয়া।
- প্রচণ্ড মাথাব্যাথা ও পেট ব্যাথা।
- অস্থিসন্ধি (Joint) ও মাংস পেশিতে (Musle) ব্যাথা।
- চোখের পেছনে ব্যাথা।
- বমি হওয়া।
- ক্লান্তি অনুভব হওয়া।
- নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
- ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়া। তবে এটা জ্বর হওয়ার ২-৫ দিনের মধ্যে হয়।
- নাক দিয়ে রক্ত পরা।
ডেঙ্গু রোগের ঘরোয়া ঔষধঃ
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। পাশাপশি দ্রুত ডেঙ্গু জ্বর থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে নিচের প্রাকৃতিক ঔষধগুলো খান।
১। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুনঃ অতিরিক্ত ঘামার ফলে দেহে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই ডেঙ্গু হলে কিছুক্ষন পর পর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে যাতে শরীরে যথেষ্ট পানি মজুত থাকে। এছাড়াও দেহে পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণে মাথাব্যাথা এবং মাসল ব্যাথা কমে যায়। বার বার পানি পান করার ফলে দেহে থাকা বারতি জীবাণু বের হয়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
২। পেঁপে পাতার জুসঃ ডেঙ্গুর ভাইরাস দুর করতে পেঁপে পাতার জুসে খুব কার্যকরী। এতে থাকে নানা পুষ্টিগুণ এবং দৈবমিশ্র রক্তে প্লেটেলেট বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেম (Immune System) কে উত্তেজিত করে ফলে ক্লান্তভাব এবং জীবাণু দূর হয়।
৩। পুদিনা পাতাঃ পুদিনা পাতায় থাকা অলৌকিক ঔষধি গুণাবলি যা ডেঙ্গু সারাতেই কার্যকরী এবং দেহের ইমিউনিটিকে শক্তিশালী করে। ৫-৬টি পুদিনা পাতা চুষে খেলে ইমিউনিটি দ্রুত কার্যকর হয়। এটা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মতে ডেঙ্গুর জন্য পরীক্ষিত ঔষুধ।
৪। নিম পাতাঃ নিম পাতায় অনেক ধরনের ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। নিম পাতা ভেজানো পানি পান করলে প্লাটেলেট এবং সাদা রক্ত কণিকা বেড়ে যায়। এটা ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
৫। কমলালেবুর শরবতঃ কমলালেবুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ডেঙ্গু ভাইরাস তাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এই পানীয় বডি সেলকে পুনরুদ্ধার করে।
- ডেঙ্গু হলে যদি সম্ভব হয় ঘনবসতি এলাকা ত্যাগ করুন।
- সবসময় মশা থেকে নিজকে রক্ষা করুন।
- যথাসম্ভব আলো বাতাসে থাকার চেষ্টা করুন।
- মশারী ব্যবহার করুন।
- নিয়মিত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- বাসায় কারো ডেঙ্গু হলে তাকেসহ সবাইকে মশা থেকে সার্বক্ষণিক নিরাপদ রাখুন।
সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
Author
-
একজন ওয়েব অন্ট্রাপ্রেনিয়ার, ব্লগার, এফিলিয়েট মার্কেটার। ২০১২ সাল থেকে অনলাইনে লেখালেখি নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৫ সালে সঠিক ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ৩৪ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
No comment yet, add your voice below!