চলুন, আজকে উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন বের করার একটি সহজ উপায় শিখি। এই পোস্টে আপনি একটি বিএমআই (Body Mass Index) ক্যালকুলেটর পাবেন যা আপনার উচ্চতা এবং ওজনের উপর ভিত্তি করে আপনার বডি মাস ইনডেক্স (BMI) নির্ণয় করবে।
বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) ঠিক না ভুল, কীভাবে হয় বিএমআই ক্যালকুলেটরের প্রয়োগ?
বিএমআই (Body Mass Index) হলো আপনার উচ্চতা এবং ওজনের উপর ভিত্তি করে আপনার শরীরের চর্বির পরিমাণ অনুমান করার একটি সহজ উপায়। এটি আপনাকে জানতে সাহায্য করে যে আপনি স্বাস্থ্যকর ওজনের মধ্যে আছেন, নাকি অতিরিক্ত ওজনযুক্ত বা অপুষ্টিতে ভুগছেন।
বডি মাস ইনডেক্সের ফরমুলা কী?
বিএমআই নির্ণয় রার জন্য আপনার ওজনকে কেজিতে এবং উচ্চতাকে মিটারে রূপান্তর করতে হবে। তারপর নিম্নলিখিত সূত্র ব্যবহার করুন: বিএমআই = ওজন (কেজি) / উচ্চতা (মিটার)^2
বিএমআইয়ের মান কী?
হাইট অনুযায়ী ওজন বের করার জন্য বিএমআই সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। এর মান অনুযায়ী আপনার ওজন স্বাভাবিক, অতিরিক্ত, বা কম কিনা তা বের করতে পারবেন:
- 18.5 কম: অপুষ্টি
- 18.5 – 24.9: স্বাভাবিক ওজন
- 25 – 29.9: অতিরিক্ত ওজন
30 – 34.9: স্থূলতা (প্রথম ধাপ) - 35 – 39.9: স্থূলতা (দ্বিতীয় ধাপ)
- 40+: মারাত্মক স্থূলতা
কাদের জন্য বিএমআই ক্যালকুলেটরের ব্যবহার ঠিক নয়?
- গর্ভবতী মহিলা
- শিশু এবং কিশোর-কিশোরী
- পেশীবহুল ব্যক্তি
- বয়স্ক ব্যক্তি (65 বছরের বেশি)
বিএমআই আমার ওজন সঠিক কিনা কিভাবে বুঝব?
বিএমআই 18.5 থেকে 24.9 এর মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক ওজন হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিএমআই কেন বয়স্কদের জন্য আলাদা?
বয়সের সাথে সাথে আমাদের শরীরের গঠন পরিবর্তন হয়। তাই একজন শিশু ও পুর্নবয়স্ক মানুষের শরীরের গড়ন সমান হয় না।
বডি মাস ইনডেক্স (BMI) হল উচ্চতা এবং ওজনের উপর ভিত্তি করে শরীরের চর্বি পরিমাপ যা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। BMI টেবিল দেখুন বা আপনার গণনা করতে নীচের টুল ব্যবহার করুন।
Your BMI is...... এরপর কি করবেন? উন্নত স্বাস্থ্যের জন্য পদক্ষেপ নিতে কি কি করতে হবে: ১। একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখাঃ স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২। শারীরিক পরিশ্রম করুনঃ বেশি নড়াচড়া করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। ৩। হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খানঃ একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া হৃদরোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি। ৪। আপনার হার্টের অবস্থা জানুন এবং নিয়ন্ত্রণ করুনঃ আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের পরিসংখ্যান ট্র্যাক করা আপনাকে আপনার হার্টের স্বাস্থ্য লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করতে পারে। শীতে লার্ভা অবস্থায় এডিস মশা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। বর্ষার শুরুতে সেগুলো থেকে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত মশা বিস্তার লাভ করে। চলুন ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো জেনে নিই- ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুর সংক্রমণের ফলে সাধারণত তীব্র জ্বর ও সে সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা (বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা) হয়। জ্বর ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় মনে হয় যেন হাঁড় ভেঙে যাচ্ছে। তাই এ জ্বরের আরেক নাম ‘ব্রেক বোন ফিভার’। জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচদিনের মধ্যে সারা শরীরজুড়ে অনেকটা অ্যালার্জি বা ঘামাচির মতো দেখতে স্কিন র্যাশ হয়। র্যাশের ফলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব দেখা দেয়। জ্বরের ফলে রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে এবং খাওয়ার রুচি কমে যায়। অনেকসময় শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়; যেমন : চামড়ার নিচে, নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত থেকে, কফের সাথে, রক্ত বমি, পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বা কালো পায়খানা, চোখের মধ্যে এবং চোখের বাইরে রক্ত পড়তে পারে। মেয়েদের বেলায় অসময়ে ঋতুস্রাব বা রক্তক্ষরণ শুরু হলে এটি অনেক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াভহ রূপ হলো ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারের সঙ্গে সার্কুলেটরি ফেইলিউর হয়ে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হয়। এর ফলে- নাড়ির স্পন্দন অত্যন্ত ক্ষীণ ও দ্রুত হয়ে পড়ে। ডেঙ্গু জ্বরের রোগনিরূপণ মাইক্রোবায়োলজিক্যাল টেস্টিং-এর মাধ্যমে সম্ভব। জ্বর হওয়ার শুরুর দিকে রক্তের সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) ও ডেঙ্গু এনএসওয়ান পরীক্ষা দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি শ্বেতরক্তকণিকা, হিমাটোক্রিট, অণুচক্রিকা, রক্তের অ্যালবুমিন, যকৃতের এনজাইম এসজিপিটি, এলকালাইন ফসফাটেজ রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হওয়া সত্ত্বেও এই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে৷ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী সাধারণত পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তবে এসময় রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের ফলে প্লাজমা লিকেজ বা রক্তের তরল অংশ কমে যায়। এতে রোগীর ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য রোগীকে নির্দিষ্ট বিরতিতে প্রচুর পরিমাণে ডাবের পানি, ওরস্যালাইন, লেবুর শরবত খাওয়ান। ডাবের পানিতে খনিজ বা ইলেট্রোলাইটস আছে, যা ডেঙ্গু জ্বরে খুবই দরকারি। বাড়িতে থাকাকালীন- প্যারাসিটামল ট্যাবলেট- সতর্কতা- ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে আকস্মিক রক্তক্ষরণের আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসা চলাকালীন রোগীকে দিনরাত সব সময় মশারির ভেতরে থাকতে হবে। এছাড়া- ১. খুব জ্বর এলে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন। পানির তাপমাত্রা আপনার শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে দুই ডিগ্রি কম হবে। বাথটাবে বা ঝরনার ধারায় গোসল করা ভালো। তবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি ভিজবেন না। গোসল সেরে দ্রুত শুকনো তোয়ালে দিয়ে পানি মুছে নিন। ২. গোসল করা সম্ভব না হলে শরীরের ত্বক স্পঞ্জ করতে পারেন। পরিষ্কার সুতির পাতলা কাপড় গামলার পানিতে ভিজিয়ে চিপে নিন। পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে (গরম বা বরফ-ঠান্ডা নয়)। এবার এই ভিজে কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে নিন। ভেজা কাপড় দিয়ে মোছার পর শুকনো কাপড়ের সাহায্যে পানি মুছে নিন। ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে ঘরোয়াভাবে যেসব খাবার খাবেন- ১. জ্বরের মধ্যে হারবাল ও গ্রিন চা বেশ উপকারি। চায়ের মধ্যে এক টুকরো আদা, এলাচি, লবঙ্গ বা খানিকটা মধু মিশিয়ে এই হারবাল চা তৈরি করা যেতে পারে। এক কাপ পানিতে দুই চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও এক চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দু-তিনবার পান করুন। এটি শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অত্যন্ত সহায়ক। ২. জ্বর হলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে। এতে বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন পড়ে। তাই এসময় সহজপাচ্য খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফলের রস বা ফল খেতে চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল, যেমন: কমলা, মালটা, লেবু, জাম্বুরা, আনারস ইত্যাদি। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে। ৩. নানা ধরনের ভেষজ খাবারের উপকারিতা আছে; যেমন পেঁপে পাতা অণুচক্রিকা বাড়াতে সাহায্য করে বলে ডেঙ্গু নিরাময়ে দারুণ উপকারি। এছাড়া পেঁপে পাতায় থাকে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন রয়েছে যা জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা ধংস করে। পেঁপে পাতার রস সেবনে প্লাটিলেটের সংখ্যা প্রথম দিনেই বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং ৫ দিনেই প্লাটিলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ডেঙ্গু নিরাময়ের জন্য পেঁপে পাতার রস কীভাবে তৈরি করবেন- পেঁপে পাতার রস বানানোর জন্য কচি পেঁপে পাতা ধুয়ে শিরা থেকে তা ছাড়িয়ে নিতে হবে । ৪. নিম পাতা ভেজানো পানি পান করুন। এর ফলে প্লেটলেট এবং সাদা রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এটি ইমিউনিটি সিস্টেমকেও অধিক কার্যক্ষম করে তোলে। ৫. এসময় ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রচুর পরিমাণে গাজর, টমেটো, শসা ইত্যাদি সবজি খেতে দিন। কেননা এতে জলীয় অংশ বেশি থাকে। ব্রকোলি ভিটামিন ‘কে’ এর অন্যতম উৎস, যা ডেঙ্গুতে রক্তপাতের ঝুঁকি কমায়। ৬. ডেঙ্গু রোগীকে প্রতিদিন নানা ধরনের স্যুপ; যেমন সবজির স্যুপ, টমেটোর স্যুপ, চিকেন স্যুপ বা কর্ন স্যুপ দিন। এতে পানির চাহিদা পূরণ হবে, পাশাপাশি পুষ্টিও নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া নরম সেদ্ধ করা খাবার, জাউ, পরিজ ইত্যাদি খাওয়ান। ৭. ডেঙ্গুর সংক্রমণের ফলে যকৃতে এসজিপিটি (SGPT: Serum glutamic pyruvic transaminase) বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত মসলা ও চর্বি তেলযুক্ত খাবার খাওয়া পরিহার করুন। তবে খাদ্যতালিকায় প্রয়োজনীয় আমিষ থাকতে হবে। যাদের জন্য ডেঙ্গু জটিল হতে পারে শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগ জটিল হয়ে উঠতে পারে। আগে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তারা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে জটিলতা বেশি হয়। এ রকম রোগীরা সহজে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারে। তাই শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য দরকার বিশেষ সতর্কতা। তবে মনে রাখবেন, মাতৃদুগ্ধ পানের মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ায় না। বাড়ির আশপাশের ঝোঁপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। এডিস মশা মূলত জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ে। তাই ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, টিনের কৌটা, ডাবের পরিত্যক্ত খোসা, কন্টেইনার, মটকা, ব্যাটারির শেল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। খেয়াল রাখুন, যাতে অ্যাকুয়ারিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ারকন্ডিশনারের নিচেও পানি জমে না থাকে। এডিস মশা সাধারণত সকালে ও সন্ধ্যায় কামড়ায়। তাই এসময় শরীরে ভালোভাবে কাপড় ঢেকে বের হোন। প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন। ঘরের দরজা-জানালায় নেট ব্যবহার করুন। দিনের বেলায় মশারি টাঙ্গিয়ে অথবা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। বিভিন্ন রাস্তার আইল্যান্ডে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের টব, গাছপালা, জলাধার ইত্যাদি দেখা যায়। এখানে বৃষ্টির পানি জমে থাকতে পারে। এসব জায়গায় মশার বংশবিস্তারের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে শরীরে মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করুন। জানালার পাশে তুলসীগাছ লাগান। এ গাছের ভেষজ উপাদান মশা তাড়ানোর জন্য খুবই উপযোগী। মশা তাড়াতে কর্পূরও দারুণ কার্যকর। দরজা-জানালা বন্ধ করে কর্পূর জ্বালিয়ে রুমের ভেতর রাখুন। ২০ মিনিট পর দেখবেন মশা একেবারেই চলে গেছে। শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর সংক্রমণের ফলে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। ডেঙ্গুর কারণে শিশুর শক সিনড্রোম হলে পেট ফুলে যেতে পারে বা শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে, যেমন রক্তবমি, পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি। শিশুর মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকরা সাধারণত কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি), এনএস ওয়ান অ্যান্টিজেন, এফজিপিটি এবং এফজিওটি ইত্যাদি টেস্ট করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পরিস্থিতি গুরুতর হলে রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি বুকের এক্স রে, পেটের আলট্রাসনোগ্রাফি, ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এছাড়া প্রস্রাব না হলে ক্রিয়াটিনিনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় শিশুদের হাত-পা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা হয়ে যাওয়া কিংবা অজ্ঞান হয়ে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থাতে চিকিৎসক বা হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে থাকা খুব জরুরি। যদি শরীরে প্লাজমা লিকেজের কারণে ফ্লুয়িড জমতে থাকে, তাহলে স্যালাইনের মাধ্যমে শরীরে অ্যালবোমিন প্রয়োগ করা হয়। রোগী শক সিনড্রোমে চলে গেলে এই চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। শিশুর রক্তে প্লেটলেট যদি ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ এর নীচে চলে আসে বা রক্তরক্ষণ হয়, তাহলে শিশুকে আইসিইউ-তে রেখে প্লেটলেট দেয়ার প্রয়োজন হয়। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে শিশুদের ফুল হাতা ও ফুল প্যান্ট পরিয়ে রাখুন। যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে, তাহলে বাড়িতে রেখেও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব। সুস্থ আগামীর জন্যই আমাদের শিশুদের সুস্থতা জরুরি। Source: https://www.cdc.gov/dengue/symptoms/index.html স্তন ক্যান্সার হল কোষের অপরিণত বৃদ্ধি। স্তন কোষের অনিয়মিত বিভাজনের ফলে এটি টিউমার বা পিণ্ডে পরিণত হয় এবং রক্তনালীর লাসিকার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ১. কোনো র্যাশ ছাড়াই চুলকানির অনুভূতি, এটি স্তন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। ব্রেস্টফিডিং করছেন না অথচ স্তনবৃন্ত (nipple) থেকে অল্প অল্প দুধের মতো জলীয় পদার্থ নিঃসরণ হচ্ছে-এমনটা দেখলে দ্বিধা না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি ব্রেস্ট ক্যানসারের আরেকটি বড় লক্ষণ। অনেক সময় স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত পড়তেও দেখা যায়। ২. স্তনে টিউমার থাকলে তা আশপাশের টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং এর ফলে স্তনে ফোলা ভাব দেখা যায়। কাঁধ এবং ঘাড়ের ব্যথাও ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ। কারণ এটি স্তন থেকে খুব সহজেই শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ৩. স্তনবৃন্ত চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া, বেঁকে যাওয়া বা স্তনবৃন্তের শেপ অসমান হয়ে যাওয়া ক্যানসারের লক্ষণ। ৫. স্তনবৃন্ত খুবই সংবেদনশীল অংশ। যদি দেখেন স্তনবৃন্ত স্পর্শ করার পরও তেমন কোনো অনুভূতি হচ্ছে না, তবে তা ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ। ৬. স্তনের ত্বকে লালচে আভা এবং কমলা লেবুর খোসার মত অমসৃণতা দেখা দিলে একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। এটি এডভান্সড ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ। ৭. স্তনবৃন্তে বিশেষ কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হওয়া, যেমন- স্তনবৃন্ত দেবে যাওয়া, চুলকানি, জ্বালা পোড়া, খুস্কি অথবা ক্ষত কিংবা ঘা এর উপস্থিতি। দেরিতে সন্তান গ্রহণ, সন্তান না থাকা, কিংবা সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ানো, খাদ্যাভ্যাসে শাকসবজি বা ফলমূলের চাইতে চর্বি ও প্রাণীজ আমিষ বেশি থাকলে এবং প্রসেসড ফুড বেশি খেলে স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা বেশি থাকে। অতিরিক্ত ওজনও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। দীর্ঘদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়া বা হরমোনের ইনজেকশন নেয়া, স্তন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে (বিশেষ করে ৫০ বছর বয়সের পর) স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। কারো যদি বারো বছরের আগে ঋতুস্রাব হয় এবং দেরিতে মেনোপজ বা ঋতু বন্ধ হয়, তারাও এ ঝুঁকিতে থাকেন। স্তনের আকার অনুযায়ী সঠিক মাপের ব্রা ব্যবহার করুন। স্তনের আকারের চেয়ে বড় মাপের বক্ষবন্ধনী স্তনের টিস্যুগুলোকে ঠিকমত সাপোর্ট দিতে পারে না। আবার অতিরিক্ত ছোট বা টাইট ব্রা স্তনের তরলবাহী লসিকাগুলো কেটে ফেলতে পারে। এটি আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। সারাক্ষণ বক্ষবন্ধনী পরে থাকার কারণে ঘাম নির্গমনে বিগ্ন ঘটে ফলে আর্দ্রতা জমে থাকে। এ কারণে স্তন ক্যান্সারের হতে পারে। ঘরে থাকার সময়টুকুতে বক্ষবন্ধনী ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন। আজকাল কর্মজীবী নারী হোক বা শিক্ষার্থী সারাদিন বাইরে থাকা আর সেই সাথে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন। এই ডিওডোরেন্ট কেনার সময় খেয়াল রাখুন এতে কী কী উপাদান আছে। এলুমিনাম বেসড উপাদান থাকলে তা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ডিওডোরেন্ট ব্যবহারের আগে একজন স্কিন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিন। আলমারির কাপড়-চোপড় পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচাতে আমরা ন্যাপথালিন ব্যবহার করে থাকি। অনেকে বাথরুমের দুর্গন্ধ এড়াতে বেসিনের সিঙ্কেও ফেলে রাখেন। এটি ক্ষতিকর কেমিকেল দিয়ে তৈরি, যা কেবল পোকা-মাকড়কে দূরে রাখে না, বরং আপনার স্তন ক্যান্সারের ঝুকিও বৃদ্ধি করে। ন্যাপথালিনের বিকল্প হিসেবে নিমপাতা শুকিয়ে কাগজে মুড়িয়ে রেখে দিন। অতিমাত্রায় অ্যালকোহল, তামাক সেবনের ফলেও স্তন ক্যান্সার হতে পারে। বংশে এর আগে কারো ব্রেস্ট বা ওভারি ক্যানসার থাকলে বা বিএআরসিএ ১, ও বিএআরসি ২, জিন থাকলে ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি। ২০ বছর বয়স থেকেই প্রত্যেকের উচিত স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে নিজের স্তন পরীক্ষা করা। মাসিক শুরুর ৫-৭ দিন পর এই পরীক্ষা করতে হবে যখন স্তন নরম ও কম ব্যথা থাকে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের স্তনকে চারটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি অংশের অভ্যন্তরে কোন চাকা বা দলার মতো আছে কিনা তা অনুভব করুন। হাত দুটো পাশে রাখুন, এবং ভাল করে লক্ষ্য করুন স্তনের চামড়ায় কোন পরিবর্তন কিংবা আকারে কোনো তারতম্য এসেছে কী না। এবার দুই হাত কোমরে রেখে বুক সামনের দিকে চিতিয়ে দেখুন স্তনে কোনো ধরনের দাগ, ঘা কিংবা গর্ত আছে কী না। এবার হাত দুটো উঁচু করে আরো একবার পরীক্ষা করুন। এক্ষেত্রে আপনি নিপল থেকে শুরু করে বৃত্তাকারভাবে বাহিরের দিকে উপর-নিচ করে সম্পূর্ণ স্তন পরীক্ষা করতে পারেন। আপনার বাম হাত দিয়ে ডান পাশের ও ডান হাত দিয়ে বাম পাশের স্তন পরীক্ষা করুন। গোসলের সময় পরীক্ষা গোসলের পূর্বে একটি হাত মাথায় রাখুন। আরেকটি হাতের আঙুল দিয়ে কলার বোনের কয়েক ইঞ্চি নিচ থেকে একদম বগল পর্যন্ত চেপে দেখুন, পুরো স্তনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চক্রাকারে পরীক্ষা করতে থাকুন, প্রথমে হালকাভাবে, পরে একটু চাপ দিয়ে স্তনের টিস্যুগুলো পরীক্ষা করুন। শুয়ে শুয়ে পরীক্ষা বিছানায় শুয়ে ডান দিকের কাঁধের ওপর একটি বালিশ রাখুন। ডান হাত মাথার পেছনে দিন। এবার বাম হাতের আঙুল দিয়ে চক্রাকারে ডান পাশের স্তন পুরোটা পরীক্ষা করুন। স্তনবৃন্ত চেপে ধরে নিশ্চিত হয়ে নিন কোনো তরল নিঃসৃত হচ্ছে কী না, কিংবা কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ব্যাপারে আছে কী না। একইভাবে এবার বাম পাশের স্তন পরীক্ষা করুন। ডাক্তারি পরীক্ষা কখন প্রয়োজন যাদের পরিবারে কারো স্তন ক্যান্সারের হিস্ট্রি রয়েছে, তাদের হাসপাতালে স্তন পরীক্ষা অর্থাৎ ম্যামোগ্রাম করিয়ে নেয়া উচিৎ। ধনী দেশগুলোতে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং-এর জন্য প্রধানত ম্যামোগ্রাম বেছে নেওয়া হয়। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের নির্ধারিত বিরতিতে এক, দুই বা তিন বছর পরপর নিয়মিতভাবে ম্যামোগ্রাম করা হয়। এটি বিশেষ ধরণের এক্স-রে, যার মাধ্যমে স্তনে খুব ছোট চাকা বা অন্যান্য পরিবর্তন ধরা পড়ে। এই পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। এছাড়া ইমেজিং পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে আলট্রাসাউন্ড, এমআরআই (MRI) এবং সার্জিক্যাল টেস্টের মধ্যে বায়োপসি (bipsy) অন্যতম। সিইএ (CEA), সিএ-১৫-৩ (CA-15-3), বা সিএ-২৭.২৯ টেস্ট এবং রক্তের সিবিসি (CBC) পরীক্ষারও প্রয়োজন পড়ে। ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসায় সার্জারি প্রথম অপশন। লাম্পেক্টমি টিউমার ও তার আশেপাশের কিছু টিস্যু কেটে এই অপারেশন করা হয়। মাস্টেক্টমি এই অপারেশন-এ স্তন এবং এর নিচের মাংসপেশি, বগলের লসিকাগ্রন্থিসহ আনুষঙ্গিক আক্রান্ত টিস্যু কেটে ফেলা হয় কিংবা সম্পূর্ণ স্তন কেটে ফেলা হয়। কোন কোন রোগীর স্তনের চামড়া সংরক্ষণ করে বিকল্পভাবে স্তন পুণর্গঠন করা হয়। শরীরের অন্য জায়গা থেকে মাংসপেশি কেটে নিয়ে স্তনের আকার করে স্তনের জায়গায় পুনঃস্থাপন করার মাধ্যমে এটি করা হয়। র্যাডিক্যাল ম্যাস্টেক্টমির মাধ্যমে বুকের দেয়ালের মাংসপেশি, বগলের নিচে লিম্ফনোডসহ পুরো স্তন কেটে বাদ দেওয়া হয়। ক্যান্সার কোষ লিম্ফনোডে পৌঁছে তার মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। সেন্টিনেল নোড বায়োপসির মাধ্যমে লিম্ফনোড সরিয়ে ফেলা হয়। একে বলা হয় অ্যাক্সিলারি লিম্ফনোড ডিসেকশন। রেডিও থেরাপি এক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে শরীরের ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করা হয়। তাছাড়া দেহের অভ্যন্তরে তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্থাপন করেও চিকিৎসা করা যায়। কেমোথেরাপি সাধারণত স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় অপারেশন পরবর্তী সময়ে Adjuvant Chemotherapy দেওয়া হয়ে থাকে। এতে ক্যান্সার কোষের পুনরাবির্ভাবের ঝুঁকি থাকে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে টিউমার বেশি বড় থাকলে Chemotherapy (Neo Adjuvant) অপারেশনের আগে নিতে হতে পারে। সাধারণত ৬-৮টি ডোজ (প্রতি মাসে একটি করে) বা রক্তনালির মাধ্যমে ইনজেকশন দেওয়া হয়। কেমোথেরাপি ইস্ট্রোজেন তৈরি বন্ধ করতে সাহায্য করে। ইস্ট্রোজেন স্তন ক্যান্সারের জন্য দায়ী। কেমোথেরাপিতে ব্যবহৃত ওষুধের মধ্যে রয়েছে সাইক্লোফসফামাইড, ডক্সোরুবিসিন, ভিনক্রিস্টিন, মিটোমাইসিন, মেথোট্র্যাক্সেট, ৫-ফ্লোরোইউরাসিল, প্যাক্লিটেক্সেল, হারসেপটিন ইত্যাদি। বায়োলজিক্যাল ইম্যুনোথেরাপি বায়োলজিক্যাল ইম্যুনোথেরাপি সার্জারি, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি তুলনায় বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তি। বায়ো-ইম্যুনোথেরাপির মাধ্যমে রোগীর রক্ত সংগ্রহ করে, ইমিউনোলজিক সেল (ডিসি-সিআইকে) তৈরি করা হয়। এরপর এ সংগৃহীত রক্ত রোগীর শরীরে পুনরায় প্রবেশ করিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো হয়। এটি ক্যান্সার কোষকে সরাসরি ধ্বংস করে মেটাস্টিসিস রোধ করে থাকে। বিশ্বে প্রতি ৮ জনে ১ জন নারী জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, যেমন- জেনেটিক কারণ। কিন্তু আপনার ডায়েট ও লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যাবে। আঁশযুক্ত খাবার ক্যান্সার সৃষ্টিকারি ইস্ট্রোজেনের মাত্রা হ্রাস করে। এজন্য মটরশুঁটি, তাজা ফল, শস্য এবং ফ্ল্যাভনয়েড, ক্রুসিফেরাস ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ সবজি খান। পেঁয়াজ পাতা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেলকে ডিটক্সিফাই করে এবং ক্যান্সার কোষের বিভাজন প্রতিরোধ করে। সয়াবিন ও অন্য সয়া পণ্য যেমন- টফু ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কিন্তু মিষ্টি স্বাদের ও রিফাইন্ড সয়া পণ্য যেমন- সয়া দুধ ও সয়া তেল এড়িয়ে চলুন। ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধক অন্যান্য খাদ্য সমূহ: মিষ্টি আলু মিষ্টি আলু বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ সবজি। উচ্চমাত্রায় বিটা ক্যারোটিন গ্রহণ কোলন, ফুসফুস এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পত্র বহুল সবুজ শাক-সবজি পালং শাক, লেটুস, হেলেঞ্চা শাক ইত্যাদি সবুজ শাক-পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম রয়েছে । এছাড়াও আছে গ্লুকোসাইনোলেটস, এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিভাইরাল উপাদান এবং কার্সিনোজেনস। এটি টিউমার সৃষ্টি রোধ, ক্যান্সার কোষ ধ্বংস ও ক্যান্সার স্থানান্তরে বাধা প্রদান করে। ক্যাবেজ পরিবার ভুক্ত সবজি বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শালগম, ব্রাসেলস স্প্রাউটে আইসোথায়োসায়ানেটস নামক ফাইটোকেমিক্যাল আছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। বেরি জাতীয় ফল ব্ল্যাক বেরি, ব্লু বেরি, স্ট্রবেরি, গোজীবেরি, রাস্পবেরি, চেরি, মালবেরি ইত্যাদিতে ক্যান্সার নিরাময়ের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। উজ্জ্বল কমলা রঙের ফল ও সবজি কমলা, লেবু, জাম্বুরা, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, গাজর ও স্কোয়াশ প্রভৃতি ক্যারোটিনয়েড এন্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এসব খাবার শরীরকে ডিটক্সিফাই করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। হলুদ হলুদে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করে দেহকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করে তোলে। অর্গানিক মাংস কোনো প্রকার স্টেরয়েড, হরমোন ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ ছাড়া পালিত মুরগির কলিজা এবং তৃণভোজী গরুর মাংস ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর খাদ্য তালিকায় থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ এ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন বি ১২ রয়েছে। সেলেনিয়াম, জিংক ও বি ভিটামিন রক্ত পরিশোধন, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার, যেমন টক দই হলো প্রোবায়োটিক বা ভালো ব্যাক্টেরিয়ার উত্তম উৎস। প্রোবায়োটিক টিউমার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। গরু ও ছাগলের দুধ এবং পনিরে রয়েছে সালফার প্রোটিন ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এটি ব্রেস্ট এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সামুদ্রিক মাছ সামুদ্রিক মাছ এন্টিইনফ্ল্যামেটরি, এন্টিটিউমার বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। এটি ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। গ্রীন টি গ্রীন টি-তে পলিফেনোলিক কম্পাউন্ড, ক্যাটেচিন, গ্যালোক্যাটেচিন এবং ইজিসিজি (এন্টিঅক্সিডেন্ট) রয়েছে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা হ্রাসে প্রতিদিন গ্রীন টি পান করুন। মাশরুম উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন মাশরুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাশরুম যোগ করুন। স্বাস্থ্যকর অপরিশোধিত ভোজ্য তেল নারকেল তেল, তিসির তেল এবং এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল অন্ত্রে পুষ্টি যোগায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জলপাই তেলে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা প্রদাহ কমায়। এমনকি ব্রেস্ট ও কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও এটি বেশ কার্যকর। রসুন রসুনে সালফারে পূর্ণ অ্যালিসিন ও ডিসালফাইড থাকে, যা স্তন ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। হলুদ হলুদ হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রুখতেও এই মশলা বিশেষ উপকারি। ব্রোকলি ব্রোকলিতে সালফোরাফেন থাকায় তা ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে খুব কার্যকর। কোলন, প্রস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটি দারুণ উপকারি। গাজর গাজর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি শরীরে ফ্যাট অক্সিডেশনে বাধা দেয় ও শরীরে ক্যান্সারের কোষ উৎপাদন কমায়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গাজর যোগ করুন, এতে ব্রেস্ট ক্যান্সারের আশঙ্কা প্রায় ১৮ থেকে ২০ শতাংশ কমে যাবে। টমেটো টমেটো হচ্ছে “নিউট্রিশনাল পাওয়ার হাউজ” যা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। টমেটোর রস ক্ষতিকর ডিএনএ নষ্ট করে ফেলে। বাদাম বাদামে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকে। বাদামে সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টি ক্যান্সার উপাদান বিদ্যমান, যা কোলন, ফুসফুস, যকৃত, এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। বাদামের মাখনও ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ উপকারি। কালো চকলেট কালো চকলেটেও রয়েছে এন্টি ক্যান্সার প্রপার্টি। ডার্ক চকলেটের পলিফেনলস ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। সতর্কতা ১. ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেয়া থেকে বিরত থাকুন। ২. আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। স্থূল নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। ৩. ঘন ঘন স্তন পরীক্ষা করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত হলে আপনার সুস্থ থাকা ও বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ৪. আপনার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান। শিশুদের ব্রেস্ট ফিডিং করলে অল্প বয়সে স্তন ক্যান্সার সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে না। ৫. ধূমপান বর্জন করুন। ধূমপান ও তামাকজাতীয় পদার্থ ক্যান্সার সৃষ্টি করে। ৬. রাত জাগবেন না। প্রতিদিন অন্তত সাত-আট ঘণ্টা ঘুমাবেন। ৭. রাসায়নিক সমৃদ্ধ পরিষ্কারক, কীটনাশক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন ৮. প্লাস্টিকের সামগ্রিতে খাদ্য ও পানি সংরক্ষণ পরিহার করুন। ৯. থ্যালেট ও প্যারাবেন সমৃদ্ধ বিউটিকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার বন্ধ করুন, এতে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। Source: https://www.healthline.com/health/breast-cancer ❏ গর্ভাবস্থায় পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। ❏ ভারী কাজ করা যাবে না। ❏ দুশ্চিন্তামুক্ত ও সদা হাসিখুশি থাকতে হবে। ❏ তলপেটে আঘাত, চাপ লাগা বা এমন কোনো কাজ করা যাবে না। ❏ দূরবর্তী স্থানে বা ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ করা যাবে না। ❏ সহবাস থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। ❏ থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, ইনফেকশন ইত্যাদি থাকলে তার চিকিৎসা নিতে হবে। ❏ নিয়মিত চেকআপ করাতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। ☞ প্রথম মাসে সূরা-আল ইমরান পড়লে সন্তান দামি হবে।
☞ দ্বিতীয় মাসে সূরা-ইউসুফ পড়লে সন্তান সুন্দর হবে।
☞ তৃতীয় মাসে সূরা মারিয়াম পড়লে সন্তান সহিষ্ণু হবে।
☞ চতুর্থ মাসে সূরা-লোকমান পড়লে সন্তান বুদ্ধিমান হবে।
☞ পঞ্চম মাসে সূরা-মুহাম্মদ পড়লে সন্তান চরিত্রবান হবে।
☞ ষষ্ঠ মাসে সূরা-ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে।
☞ সপ্তম, অষ্ঠম, নবম ও দ্বশম মাসে সূরা-ইউসুফ, মুহাম্মদ এবং ইব্রারাহিম কিছু কিছু পড়বে। ☞ ব্যাথা উঠলে সূরা-ইনশিকাক পড়ে পানিতে ফুক দিয়ে পান করলে ব্যথা কমে যাবে। গাজরের উপকারিতা সর্বজন-প্রশংসিত। এজন্য একে সুপার ফুড বলা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গাজর সালাদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পোলাও, খিচুড়ির সাথে মিশিয়েও গাজর রান্না করা যায়। এছাড়া গাজরের আচার, হালুয়াও দারুণ উপাদেয় খাবার। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ফাইবার রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে ৮২৮৫ মাইক্রোগ্রাম বিটাক্যারোটিন, ৪১ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি, ৩৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১২ মিলিগ্রাম ফসফরাস এবং ১২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। গাজর মূল জাতীয় সবজি। ওজন কমানোর জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার। চলুন, গাজর খাওয়ার কিছু উপকারিতা জেনে নিই- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে গাজরে Falcarinol এবং Falcarindiol রয়েছে, যা আমাদের শরীরের এন্ট্রিক্যান্সার উপাদানগুলোকে রিফিল করে। গাজর খেলে ফুসফুস ক্যান্সার, কলোরেক্টাল ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। হজমের পর খাদ্যের কিছু উচ্ছিষ্ট আমাদের শরীরে থেকে যায়, যাকে ফ্রি র্যাডিকেলস বা মৌল বলে। এ ফ্রি র্যাডিকেলস শরীরের কিছু কোষ নষ্ট করে। গাজর এ ধরনের মৌলের প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে গাজর চোখের রেটিনাতে বেগুনি পিগ্মেট এর সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে চোখের ফাংশন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। রাতকানা রোগ দূরীকরণে গাজর বেশ উপকারি। লিভারের সমস্যা সমাধানে গাজরে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায় যা মলত্যাগের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে লিভার ও কোলনকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে গাজর সেবন করলে লিভারে প্রদাহ, ফোলা ভাব ও সংক্রমণ কমে যায়। এটি হেপাটাইটিস, সিরোসিস এবং কোলেস্টেসিসের মতো সমস্যা থেকে লিভারকে রক্ষা করে। গাজর লিভারের পিত্ত এবং হিমায়িত ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে। এটা দেহের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অ্যান্টিএজিং হিসেবে গাজর আমাদের শরীরের অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। মেটাবলিজমের কারণে শরীরে ক্ষয়প্রাপ্ত সেলগুলিকে ঠিকঠাক করতে গাজর খুব কার্যকর। সুন্দর ত্বকের জন্য গাজর গাজর ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত গাজরের জুস খেলে মুখের দাগ, বয়সের ছাপ দূর হয়ে যায়। এছাড়া গাজরে বিদ্যমান অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্টস্ ত্বক শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে, ত্বককে করে তোলে সুস্থ এবং সতেজ। অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে কোথাও কেটে বা পুড়ে গেলে সেখানে লাগিয়ে নিন কুচি করা গাজর বা সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট। এতে ইনফেকশনের আশঙ্কা দূর হয়ে যাবে। ওরাল স্বাস্থ্যসুরক্ষায় গাজর গাজর মুখের লালা উৎপাদন বাড়ায়। গাজর খাওয়ার সময় আমাদের মুখে ‘সিলভা’ নামক একটি যৌগের নিঃসরণ ঘটে। সিলভা মুখে অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। নিয়মিত গাজর খেলে দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। কানের ব্যথার প্রতিকারে সর্দি-কাশি বা কোনো অসুস্থতার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণে অনেকসময় কানে ব্যথা হয়। কলা, গাজর, আদা এবং রসুন একসাথে পানিতে সেদ্ধ করে ১-২ ফোঁটা কানে ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যাবে ইনশা’আল্লাহ । অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে গাজরের জুস শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। গাজর রক্তও পরিষ্কার করে থাকে। গাজরের স্যুপ ডায়রিয়া নিরাময়ে ভারি উপকারি। কৃমিনাশক হিসেবে গাজর ভালো প্রতিষেধক। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গাজরের সঙ্গে কয়েক কোয়া রসুন মিশিয়ে খান। হার্টের সুরক্ষায় গাজরের উপকারিতা গাজর ডায়েটরি ফাইবারে পরিপূর্ণ থাকে। এই উপাদানগুলো ধমনির ওপর কোনো কিছুর আস্তরণ জমতে না দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, হার্টকে সুস্থ রাখে। গাজরের আলফা ক্যারোটিন ও লুটিন নামক উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে গাজর দারুণ উপকারি। গাজরের রস দেহে চর্বির মাত্রা কমায়। সে সঙ্গে গাজরে বিদ্যমান ফাইবার কোলন পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে রক্ষা করে। গাজর রক্তের প্রধান উপাদান আরবিসিকে দীর্ঘজীবী করে। ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে। সাথে সাথে গাজর ত্বকে উপকারি কোলেস্টেরলের বা লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গাজরের পুষ্টিগুণ ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বের করে দেয় যা এথারোস্কেলোরোসিস এবং স্ট্রোক এর ঝুঁকি হ্রাস করে। মস্তিষ্কের সুরক্ষায় গাজরের হালুয়া শিশুদের বুদ্ধি বিকাশে সাহায্য করে। এবং গাজরের জুস নার্ভাস সিস্টেমকে উন্নত করে ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা সমাধানে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা(যেমন- অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস এবং এমফিসেমা ইত্যাদি) প্রতিরোধে গাজর খুব উপকারি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গাজর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। তবে কিডনি রোগে আক্রান্ত ও ডায়াবেটিসের রোগীরা মিষ্টি গাজর খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। শক্তি বৃদ্ধিতে গাজরে দেহের শক্তি ও বিকাশের জন্য আবশ্যকীয় প্রোটিন, শক্তিদায়ক উপাদান চর্বি-ও কার্বো-হাইড্রেট রয়েছে। গাজরের রস সব ধরনের জ্বর, দুর্বলতা, নাড়ি সম্পর্কিত বিকার ইত্যাদির প্রতিকারে কার্যকর ভেষজ ঔষধ। যেকোনো বড় অস্ত্রোপচারের পর রক্তের ঘাটতি হয়। এই ঘাটতি পূরণে গাজর খুব উপকারি। গাজরে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ রয়েছে, যা মানুষের হাড়, দাঁত, নখ সুগঠিত করে। গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়ার উপকারিতা নিয়মিত গাজর খেলে গর্ভাবস্থায় আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সহজে কাটিয়ে উঠতে পারবেন। অনেক গর্ভবতী মহিলাই তাদের গর্ভাবস্থায় শিরায় টান লাগা বা পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া অনুভব করে থাকতে পারেন। গাজর এসব নানাবিধ সমস্যার ভালো প্রতিষেধক। গাজর অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা প্রতিরোধেও সহায়তা করে। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা আপনার অনাগত শিশুর হাড় এবং তরুণাস্থির গঠনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ। এতে বিদ্যমান ফোলিক অ্যাসিড গর্ভের সন্তানের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশেও সাহায্য করে। Source: https://www.medicalnewstoday.com/articles/270191 কলা শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ সহায়ক। এজন্য আমাদের প্রায় প্রতিদিনকার প্রাতরাশে এটি খুব সহজেই জায়গা করে নিয়েছে। কলা আপনার তাৎক্ষণিক শক্তির সঞ্চারিকা হিসাবেও কাজ করবে। স্থায়ীভাবে সকল প্রকার ক্লান্তি ও অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে কলার জুড়ি নেই। প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় ১১৬ ক্যালোরি শক্তি, ৮৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ০.৬মি.গ্রা. আয়রন থাকে। এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফসফরাস, প্রোটিন, খনিজ লবণ রয়েছে। কলা পটাশিয়ামের এক অনন্য উৎস। তাছাড়া শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি৬ কলা থেকে পাওয়া যায়। কলা খাওয়ার উপকারিতা কলা বহুগুণে সমৃদ্ধ। তাই, শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ছোট-বড় সকলেরই একটি করে কলা খাওয়া উচিৎ। আসুন জেনে নেওয়া যাক কলা খাওয়ার কিছু উপকারিতা– কলায় বিদ্যমান ট্রাইপটোফিন নামক রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে দেহে ফিল-গুড হরমোন নিঃসৃত হয়। কলা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়বিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কলা খুব উপকারি। প্রি-মেন্সট্রয়াল সিনড্রোম প্রতিরোধে কলা ফ্যাটি ফুডের মতোই কার্যকর। কলায় বিদ্যমান প্রেকটিন শরীরের ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে মূত্রের মাধ্যমে বের করে দেয়। এমনকি শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতেও বেশ সহায়ক। এছাড়া কলা শরীর থেকে চর্বি এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় উপাদান শোষণ করে এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করে। কলায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা শরীরে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়। কলা রক্তকে পরিশুদ্ধ করতেও অনেক কার্যকর। কলা শরীরে লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন একটি বা দুটি কলা খেলে আপনার হৃদযন্ত্র সচল থাকবে এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। কলা ইউরিনে ক্যালসিয়াম জমা হতে বাধা দেয় বলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। কলাতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা ও সল্যুবল ফাইবার রয়েছে , যা শরীরে শক্তির যোগান দেয়। এছাড়া কলা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদন করে। কলা অ্যান্টাসিডের মত কাজ করে। কলার ফাইবার ও প্রোবায়োটিক অলিগোস্যাকারাইজড হজমের জন্য দারুণ উপকারি। এর ফলে আপনার শরীরে অধিক পরিমাণে পুষ্টি সঞ্চয় হয়। কলা পাকস্থলীতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধেও সহায়তা করে। অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় শুকনো কিছু খাবারের সঙ্গে কলা মিলিয়ে খাওয়া ভালো। তা না হলে শরীরে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। কলা প্রোটেক্টিভ মিউকাস লেয়ার বৃদ্ধির মাধ্যমে পাকস্থলিতে পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে, যা আপনাকে বুক-জ্বালা ও পাকস্থলীর আলসার থেকে রক্ষা করবে। কলা অভ্যন্তরীণ অ্যাসিড নিঃসরণে বাধা দেয়। কলা ত্বকের হারানো আর্দ্রতা পুনরুদ্ধার করে ত্বককে সতেজ করে তুলতে, শুষ্কতা নিরাময় করতে সহায়তা করে। ব্যবহারবিধি: ১) অর্ধেক পাকা কলা নিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ো এবং ১ চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিন। অথবা একটা পাকা কলা কেটে এর মধ্যে একটি লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ২) এরপর এটি মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৩) তারপর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অন্যতম একটি উপকারি ফেসপ্যাক। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরণ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে সহায়তা করবে। কলা ডোপামিন, ক্যাটেচিন্স এর মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে থাকে। পাকা কলা শরীরের TNF-A নামক এক ধরণের যৌগ সরবরাহ করে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এতে করে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। কলায় বিদ্যমান ফোলেট ও লেক্টিন নামক রাসায়নিক উপাদান শরীরের কোষগুলোকে ভাইরাস আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। নিয়মিত কলা খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এটি কোষে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং নিউরন গুলোকে সুগঠিত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও মৃগী এবং পারকিনসন রোগের সমস্যায় সমাধানে কলা দারুণ কার্যকর। কলা খাওয়ার ফলে মেনোপজাল পরবর্তী মহিলাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। কলা হাড়ের সুরক্ষায় সহায়তা করে। নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে অস্টিওপোরোসিস এর সমস্যা কম হয়। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি সিক্স ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। প্রতিদিন কলা খাওয়ার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরে ফ্রুক্টোজ এর পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে। কলায় বিদ্যমান ভিটামিন-এ চোখ এবং কর্নিয়ায় সুরক্ষা প্রদান করে থাকে; যাতে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা চোখ সংক্রমিত হতে না পারে। কলায় থাকা খনিজ উপাদান পিরিয়ডের সময় জরায়ুর পেশীগুলোকে শক্তি প্রদান করে এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে সকাল বেলা বমি ভাব কিংবা বমি হতে দেখা যায়। কলা মর্নিং সিকনেস সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে কলা খান। সবুজ কলাতে প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ রয়েছে। এটি শরীরে ফাইবার এর মত কাজ করে রক্তে শর্করার মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে। কলাতে বিদ্যমান ট্রিপটোফ্যান ও মেলাটোনিন ঘুমের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। রোজ খাদ্যতালিকায় একটি করে কলা রাখুন, অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়ে যাবে ইনশা’আল্লাহ। দীর্ঘ সময় ধরে খালিপায়ে হাঁটা-চলা করলে গোড়ালির সমস্যা দেখা যেতে পারে। ফাটা গোড়ালির সমস্যা সমাধানে কলা খুব উপকারি। ব্যবহার: দুটি পাকা কলা ব্লেন্ড করে পানিতে মিশিয়ে পরিষ্কার পায়ে লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি পায়ের ত্বককে মসৃণ করে তুলবে। চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে এবং চুলের বৃদ্ধিতে কলা বেশ সহায়ক ভেষজ মেডিসিন। এটা চুল পড়া বন্ধের প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবেও কার্যকর। খুশকির সমস্যা দূর করতে চুলে কলা, টক দই আর লেবুর রসের তৈরি একটি মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার: অর্ধেক পাকা কলার সঙ্গে তিন চামচ টক দই ও এক চামচ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এটি শুধু চুলের গোড়া ও মাথার তালুর ত্বকে লাগাবেন। খেয়াল রাখতে হবে, এই মিশ্রণটি যাতে মাথার বাকি চুলে না লাগে। ২০-২৫ মিনিট পর চুল ভাল ভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে এবং আরো উজ্জ্বল। কাঁচা কলায় আছে অত্যাবশ্যকীয় খনিজ ও পুষ্টি উপাদান যা চর্বিকে শক্তিকে রূপান্তরিত করে এবং এনজাইম ভাঙতে সহায়তা করে। কাঁচা কলা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে কিডনি বা বৃক্কের কাজকে ত্বরান্বিত করে । প্রতিদিন কাঁচা কলা খেলে ‘কিডনি ক্যান্সার’- এর ঝুঁকি দূর হয়ে যায়। কাঁচা কলার খোসা সেদ্ধ করে ভর্তা করে বা সবজির মতো রান্না করেও খেতে পারেন। ডায়রিয়ার সময় কাঁচা কলা খেলে শরীরের পটাশিয়ামের অভাব দূর হয়। তবে বেশি পরিমাণে কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলার থোড়ের স্বাস্থ্যগুণ কলার থোড় পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কলার খোসাতেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কলার খোসাকে আপনি ব্যক্তিগত অনেক কাজে ব্যবহার করতে পারেন। তবে রাসায়নিকমুক্ত কলা হলে তা ভালো কাজে দেবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক, এর গুণাগুণ সম্পর্কে- জুতা পলিশ জুতা চকচকে রাখতে কলার খোসা ব্যবহার করা হয়। খোসার ভিতরের নরম অংশ জুতার উপর কিছুক্ষণ ঘষুন। তারপর একটি নরম কাপড় দিয়ে জুতা মুছে ফেলুন। রূপার উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে কলার খোসা ব্লেন্ড করে পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এ পেস্টটি রুপার পাতের উপর ঘষুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে একটি শুকনো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। দাঁত সাদা করতে হলদেটে দাঁত নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই। কলার খোসার নরম অংশটি দিয়ে দাঁতের উপর কিছুক্ষণ ঘষুন। নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের হলদে ভাব দূর হয়ে যাবে। ব্যথা প্রশমিত করতে শরীরের যেকোনো প্রদাহে সরাসরি কলার খোসা লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর খোসাটি সরিয়ে ফেলুন। দেখবেন ব্যথা অনেকটা কমে গেছে। এছাড়া ভেজিটেবল অয়েল এবং কলার খোসা একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। ব্রণ প্রতিরোধে ব্রণের উপর কলার খোসার একটি ছোট টুকরো কেটে নিয়ে নরম অংশটি ম্যাসাজ করুন। তারপর ৫ মিনিটের জন্য তা রেখে দিন। এটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ডিমের সাদা অংশ এবং কলা খোসার ভিতরের অংশ একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এ মিশ্রণটি ত্বকে ৫ মিনিট ধরে ব্যবহার করুন ৫ মিনিট। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কালো দাগ দূর করতে ব্যথায় কালো হয়ে যাওয়া দাগ দূর করতে কলার খোসা বেশ কার্যকর। দাগের স্থানে কলার খোসা কিছুক্ষণ ঘষুন অথবা ঐ স্থানে কলার খোসা দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন। দাদের ওষুধ কলার খোসা দাদের ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। চুলকালে সেই অংশে কলার খোসা ঘষে দিলে চুলকানি বন্ধ হবে। কোথাও পাঁচড়া-জাতীয় কিছু হলে সেই জায়গায় কলার খোসা মেখে রাখুন, অথবা কলার খোসা পানিতে মধ্যে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে সংক্রমিত জায়গা কয়েক দিন ধুয়ে ফেলুন। মশা কিংবা পোকামাকড়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্নে কলার খোসা ব্যবহার করুন। তবে আক্রান্ত স্থানটিতে কলার খোসা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই একবার ডেটল দিয়ে মুছে নেবেন। তাতে ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে যাবে। সোরিয়াসিস রোগে সোরিয়াসিসের মতো মারাত্মক রোগের জন্যও কলা বেশ কার্যকর প্রতিষেধক। ত্বকে এটি ব্যবহার করার ১০ মিনিটের মধ্যে সোরিয়াসিসের লক্ষণগুলো চলে যাবে। কলার পুষ্টিগুণ গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের সুস্থ বিকাশে সহায়তা করে। বিভিন্ন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্তি দিতে এবং মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যও কলা খুব উপকারি। চলুন দেখে নিই, এসময় কলা খাওয়ার কিছু উপকারিতা- সতর্কতা: কলাতে চিটিনেজ নামক অ্যালার্জেন থাকে, যা ল্যাটেক্স-ফ্রুট সিনড্রোমের কারণ হয়। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদেরও খুব বেশি কলা খাওয়া উচিৎ নয়, কারণ এতে চিনির মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে। কলার অপকারিতা ১) কলার মধ্যে অতিমাত্রায় পটাশিয়াম বিদ্যমান। অত্যাধিক পরিমাণে পটাশিয়ামের উপস্থিতির কারণে হৃদপিণ্ড অকার্যকর হয়ে পড়ে। তাই অতিরিক্ত কলা খাওয়া এড়িয়ে চলুন। ২) কলা গাছের পাতা, কান্ড সবকিছুই খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু এলার্জির আশঙ্কা থাকলে দেখে নেবেন কলা গাছের কোন বিশেষ অংশ আপনার খাওয়া উচিৎ নয়। ৩) কলার মধ্যে উচ্চমাত্রায় অ্যামিনো এসিড থাকায়, অধিকমাত্রায় কলা খাওয়ার ফলে রক্তনালীতে প্রভাব পড়তে পারে। যার ফলে মাথাব্যথার সৃষ্টি হয়। ৪) অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে হাইপারক্যালেমিয়া রোগ দেখা দিতে পারে। যার ফলে পেশির দুর্বলতা কিংবা অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের সমস্যা হতে পারে। ৫) যদি কারো কিডনির সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে তাদের কলা খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া উচিৎ। প্রাণবন্ত থাকতে কে না চায়? কিন্তু সবসময় সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বহুমুখী কাজের চাপ যেনো দিন দিন বেড়েই চলেছে। সময়ের সাথে দৌড়াতে দৌড়াতে-ই দিনের শেষ। এই নিরন্তর ব্যস্ততার মাঝেও চটপটে থাকতে চাই শরীরে সঠিক মাত্রার পুষ্টিগুণ। একদম ছোট শিশু থেকে শুরু করে, কিশোর-তরুণ, প্রাপ্তবয়স্ক এমনকি বৃদ্ধদেরও নিয়মিতভাবে ফল খাওয়া উচিৎ। কলা তেমনই একটি ফল যা খেতে সুস্বাদু এবং অবাক করা সব ভেষজগুণে টইটম্বুর। Source: https://www.healthline.com/nutrition/11-proven-benefits-of-bananasআপনার বিএমআই (বডি ম্যাস ইন্ডেক্সিং) চেক করতে নিচের তথ্যগুলো পূরণ করুন।
BMI Classification
less than 18.5:
Underweight
18.5 - 24.9: Normal weight
25 - 29.9: Overweight
30 - 34.9: Class I Obese
35 - 39.9: Class II Obese
40 upwards: Class III Obese
অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা সম্পর্কে আরও জানুনডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা | ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় সমূহ
শরীরের হাত-পা ও অন্যান্য অংশ ঠান্ডা হয়ে যায়।
প্রস্রাব কমে যায়।
হঠাৎ করে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে।ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষাঃ
ইত্যাদি টেস্ট করানোরও প্রয়োজন পড়ে ।ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসাঃ
তারপর তা পিষে রস বের করতে হবে।
২৫ মিলিলিটার বা ৫ চা চামুচ পাতার রস এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা ( সকালে ও সন্ধ্যায়) দুই চামচ করে সেবন করতে হবে।ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে করণীয় কি কিঃ
শিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসাঃ
https://www.medicalnewstoday.com/articles/179471
https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/dengue-fever/diagnosis-treatment/drc-20353084
https://www.medicinenet.com/dengue_fever/article.htm
https://emedicine.medscape.com/article/215840-treatmentসর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
কিভাবে চুলের যত্ন করবেন
চুলের যত্নে লেবু
চুলের যত্নে বিভিন্ন উপায়ে লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
লেবুর এমন কিছু ব্যবহারের কথা জেনে নেওয়া যাক-
১. ৪ টেবিল চামচ আমলকির রস ও সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে চুলের ত্বকে ম্যাসেজ করুন। আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩বার এই প্যাক ব্যবহারে চুল হবে মসৃণ ও ঝলমলে।
২. খানিকটা নারকেল তেল ও লেবুর রস একত্রে মেশান। এবার মিশ্রণটি ধীরে ধীরে চুলের গোঁড়ায়স্ক্যাল্প মাখুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়ার পর কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এভাবে ছয় সপ্তাহ ব্যবহার করুন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে।
৩. চুল শুষ্ক প্রকৃতির হলে অথবা মাথার ত্বক ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে, শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এতে চুল ঝরঝরে থাকে, মাথার ত্বক ও চুল ঘেমে স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়ে না, এবং ঘামজনিত দুর্গন্ধও হয় না। বাইরে যাওয়ার আগে এভাবে শ্যাম্পু করে নেওয়া ভালো, প্রয়োজনে প্রতিদিনই করতে পারবেন।
৪. তৈলাক্ত মাথার ত্বকে যদি খুশকি হয়, তাহলে ২ টেবিল চামচ মেথি, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে মাথার ত্বকে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। অনেক সময় মাথায় ফুসকুড়ির মতো গোটা দেখা যায়। এ রকম সমস্যা দূর করতে এটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করুন।
৫. ২ টেবিল চামচ আমলকির পাউডার, সমপরিমাণ মেথি পাউডার ও ১টি লেবুর খোসা (সবুজ অংশ) একসঙ্গে পেস্ট করে নিন। এরপর এক থেকে দেড় টেবিল চামচ জলপাই তেল বা নারকেল তেল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা (মাথার ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে চুলেও দেওয়া যায়)। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করুন। এটি চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে দারুণ সহায়ক।
নিয়মিত লেবুর এই হেয়ার প্যাকগুলো ব্যবহারে খুশকিসহ চুলের সব সমস্যা দূর হবে। চুলের রুক্ষতা কমবে, সে সঙ্গে কমবে চুল পড়ার হারও।
চুলের যত্নে পেঁয়াজ
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক উপাদান থাকে। এটি চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে দারুণভাবে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি করবেন পেঁয়াজের রস
প্রথমে পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর একে চার টুকরো করে কাটুন। এবার পেঁয়াজের টুকরোগুলো মিক্সারে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড হয়ে গেলে পেঁয়াজের রস ছেঁকে নিন। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে পেঁয়াজের রস চুলের গোঁড়াে লাগানোর সময় গোটা পেঁয়াজের টুকরো যেন চুলে আটকে না যায়।
পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক
১. পেঁয়াজ ও মধু দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক : এক কাপের এক তৃতীয়াংশ পেঁয়াজের রস নিন। তারপর এক টেবিল চামচ মধু মেশান। এবার মিশ্রণটি চুলের গোঁড়ায় ভালো করে মেখে নিন। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
২. অলিভ অয়েল এবং পেঁয়াজের রস : অলিভ অয়েলের সঙ্গে তিন টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস মেশান। এ মিশ্রণটি হাতে নিয়ে চারপাশ থেকে চুলের গোঁড়ায় এবং চুলের গোঁড়াে লাগিয়ে নিন। দুই ঘণ্টা রেখে কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুলের শক্তি বৃদ্ধিতে এবং খুশকি কমাতে এটি দারুণ কার্যকর।
চুলের যত্নে মধু
ঝলমলে ও সুন্দর চুলের জন্য মধু অত্যন্ত কার্যকর। চুলের যত্নের জন্য যে প্রক্রিয়ায় মধু ব্যবহার করবেন:
২০০ গ্রাম নারকেল তেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অথবা ১ কাপ টক দইয়ের সাথে আধা কাপ মধু মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
চুলের যত্নে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে ছত্রাকবিরোধী এবং জীবাণুনাশক উপাদান, যা মাথার ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধ করে। ফলে খুশকি থেকে মুক্ত থাকে চুল। এতে বিদ্যমান বিশেষ ধরনের ময়েশ্চারাইজার আপনার চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে। প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর অ্যালোভেরা চুলের ফলিকলকে পরিপুষ্ট করে চুল পড়া কমায়। চুল দ্রুত বড় হতেও সাহায্য করে।
অ্যালোভেরা ব্যবহারের নিয়ম
১. অ্যালোভেরার জেল সরাসরি মাথার ত্বকে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রেখে দিন, এরপর মৃদু (মাইল্ড) শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু-তিন দিন ব্যবহারে দারুণ উপকার পাবেন।
২. রুক্ষ চুলকে উজ্জ্বল করতে ব্যবহার করতে পারেন মধু,নারকেল তেল ও অ্যালোভেরা জেল। শুষ্ক চুলে আর্দ্রতা ফেরাতে ও চুলের ডিপ কন্ডিশনিং করতে এই উপাদানগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
এক চা চামচ মধু, দু’ চামচ নারকেল তেল ও দু’ চামচ অ্যালোভেরা নিয়ে মিশিয়ে এক জেলের মতো উপাদান তৈরি করুন। গোসলের ৩০ মিনিট আগে এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে একটা শাওয়ার ক্যাপে ঢেকে দিন মাথা। পারে আধঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন।
৩. চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে দই ও অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন। দু’ চামচ টক দইয়ের সঙ্গে এক চামচ অ্যালোভেরা মিশিয়ে প্রায় ১০ মিনিট ধরে মাথার ত্বকে মাসাজ করুন। পরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন চুল। এরপর অবশ্যই কন্ডিশনার লাগাবেন।
যারা নিয়মিত চুলে মেহেদি লাগান, তারা মেহেদির সঙ্গেও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন ।
চুলের যত্নে ডিম
ডিমে প্রচুর পরিমাণে খনিজ, প্রোটিন এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে যা চুলের যত্নে দারুণ উপকারি। এটি চুল পড়া প্রতিরোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
আসুন জেনে নেই পাতলা চুল ঘন করতে ডিমের ব্যবহার-
১. একটি পাত্রে ডিম ফাটিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে নিন। ক্যাস্টর অয়েলের পরিবর্তে নারকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন। ভাল করে ডিম ফাটিয়ে একটা মাস্ক তৈরি করে নিন।
সপ্তাহে তিন দিন এই মাস্ক ভাল করে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। মাথার তালুতেও ম্যাসাজও করুন। আধ ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পুর পর চুলে হালকা করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন।
২. চুল সিল্কি করতে এক কাপ দইয়ের সঙ্গে একটা ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিন। এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। চুল থেকে আঁশটে গন্ধ বেরোলে হালকা শ্যাম্পু করে নিন।
৩. ঘন চুল পেতে চাইলে একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা চামচ অলিভ অয়েল ঘন করে মিশিয়ে নিন। স্ক্যাল্প ও চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর প্রথমে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে তারপর শ্যাম্পু করে নিন।
৪. ডিম দিয়ে তৈরি করতে পারেন কন্ডিশনার। একটা ডিমের কুসুমের সঙ্গে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মেশান। এর সঙ্গে হালকা গরম পানি মিশিয়ে পাতলা করে নিন। চুল শ্যাম্পু করার পর এই কন্ডিশনার গোটা চুলে লাগান।
ছেলেদের চুলের যত্ন
ছেলেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ধরে জেল হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করে থাকে। এতে চুলে ময়লা, ধুলোবালি আটকে যায়। তাই দিনের বেলা যখন আপনার বাইরে কাজ করার সম্ভাবনা বেশি, তখন জেল ব্যবহার করবেন না। আর যখনই জেল বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করবেন, চেষ্টা করুন দ্রুত বাসায় ফিরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার এর স্থলে এক মগ পানিতে লেবুর রস দিয়েও চুল ধুয়ে নিতে পারেন। কন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন কন্ডিশনার যেন চুলের গোঁড়া ও মাথার ত্বকে না লেগে থাকে।
এছাড়া যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে:
নিয়মিত চুল আঁচড়াতে হবে। এতে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এতে মাথার ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
অতিরিক্ত চা, কফি পান পরিহার করতে হবে।
প্রতিটি চুলের গোড়ায় অক্সিজেনের প্রবেশ ও হাইড্রোজেন নির্গমনের ব্লক রয়েছে। প্রতিদিন গোসল করলে এ ব্লকগুলো সচল থাকে। চুলের বৃদ্ধিও ভালো হয়।
মাফলার, টুপি বা অন্য কোনো গরম কাপড়ের উপকরণ দিয়ে মাথা বা চুল ঢেকে রাখলে চুল ভালো থাকে।
শীতের সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও মাথায় গরম পানি দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
মেয়েদের চুলের যত্ন
মেয়েদের সৌন্দর্য হলো চুল(Hair)। তাই নিয়মিত চুলের যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরি। ব্যস্ত জীবনের মাঝে একটু সময় বের করে কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন—তা জেনে নিই-
আবহাওয়া ও পরিবেশ বুঝে চুলের যত্ন
আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চুলের অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বৃষ্টিতে চুল ভিজলে ভেঙে যেতে পারে এবং পড়েও যায়।
এজন্য-
সপ্তাহে দুই দিন চুলে তেল লাগান। মাথায় পুরো এক ঘণ্টা তেল রেখে তবে শ্যাম্পু(Shampoo) করে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে নিয়মিত চুলে তেল লাগালে চুল সতেজ ও কোমল থাকবে।
চুল বুঝে শ্যাম্পু নির্বাচন
কারও চুল পাতলা আবার কারও ঘন হয়। তাই চুলের ব্যালান্স বুঝে শ্যাম্পু কন্ডিশন করতে হবে। স্বাভাবিক ও রং করা চুলের শ্যাম্পু করার ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। অনেকের ধারণা, বেশি শ্যাম্পু করলে চুল পড়ে যায়। বরং চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু করলে পরিষ্কার থাকে এবং এর স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকে।
শ্যাম্পুর পরিবর্তে
শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে এবং রং করা চুলের জন্য মসুর ডাল বেশ ভালো কাজ করে। দুই টেবিল চামচ শর্ষেবাটা ও দুই টেবিল চামচ মসুর ডাল সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পাতলা পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর পরিষ্কার মাথার চুলের গোড়ায় এই পেস্টটি ব্যবহার করুন।
কন্ডিশনারের বিকল্প চা–পাতা
বাড়িতে চা খাওয়ার পর চায়ের পাতা ফেলে না দিয়ে এটি চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। এ চা–পাতা পানিতে ভিজিয়ে শ্যাম্পুর পর চুলে দিয়ে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিন্তু এর জন্য চা তৈরির সময়ে কোনো রকম চিনি ব্যবহার করা যাবে না। তাতে চুলে আঠালো ভাব চলে আসবে।
মেয়েদের চুলের যত্নে কিছু ভেষজ তেল-
ক্যাস্টর অয়েল
ক্যাস্টর অয়েল ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ যা চুলকে মজবুত ও উজ্জ্বল করে। এ ছাড়া এটি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। অন্যদিকে এতে ভিটামিন বি রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নারকেল তেল
চুলের যত্নে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। নারকেল তেল ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ। চুল এ তেল ভালোভাবে শুষে নিতে পারে। এর ফলে এই তেলের কার্যকারিতাও বেশি।
সূর্যমুখী তেল
তৈলাক্ত চুলের জন্য এ তেল খুব উপযোগী। হালকা হওয়ার ফলে চুলে ম্যাসাজ করলে, চুল তেল তেলে হয় না। তবে কখনোই চুলে সূর্যমুখী তেল বেশি সময়ের জন্য লাগিয়ে রাখবেন না। এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে দ্রুত বাড়ে চুল এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া বন্ধ করে। চুলের অকালপক্কতা প্রতিরোধে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল দারুণ সহায়ক।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
১. নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েকটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি রাতে ঘুমানোর আগে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগান। চুলের গোড়ায় ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন। পরদিন সকালে ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।
২. একটি কলা চটকে নিন। ৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল ও ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চুলের লাগান। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অ্যালোভেরা জেল ব্লেন্ড করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন।
৩. ২ টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে কয়েকটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল মেশান। মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট। মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করে পরিষ্কার করে ফেলুন চুল।
বাড়তি সতর্কতা
অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন নারীর চুল পড়া ও পুরুষের টাকের সবচেয়ে বড় কারণ। এই হরমোন সাধারণত পুরুষের শরীরে বেশি পরিমাণে থাকে। নারীর মেনোপজের সময় ও পরে অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন আনুপাতিক হারে বেড়ে যায়। তখন হঠাৎ চুল বেশি করে পড়তে শুরু করে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ছত্রাক সংক্রমণ বা খুশকি চুল পড়ার অন্যতম কারণ। তাই চুল ভেজা রাখা যাবে না। প্রয়োজনে চুলে ছত্রাক বিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
শরীরের পুষ্টির ওপর চুলের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, খনিজ ও ভিটামিন জাতীয় খাবার রাখুন। এছাড়া স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল পেতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিৎ।
Source:
https://www.medicalnewstoday.com/articles/321850
https://www.healthline.com/health/beauty-skin-care/regrow-hair-naturally
https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/hair-loss/diagnosis-treatment/drc-20372932
https://www.healthline.com/health/beauty-skin-care/how-to-repair-damaged-hair সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে যা জানা জরুরি
স্তন ক্যান্সার বা ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ
৪. স্তনে ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো লাম্পও ক্যান্সারের লক্ষণ। এই ব্রেস্ট লাম্পগুলি অনেক সময় আন্ডারআর্ম বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়, যেগুলি টিপলে শক্ত অনুভূত হয়। অন্তর্বাস পরে থাকার সময় যদি ঘর্ষণ অনুভব করেন, এবং ব্যথা লাগে তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।ব্রেস্ট ক্যান্সার কেন হয়
স্তন ক্যান্সারের ডায়াগনোসিস
ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা
ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়
ক্যান্সার প্রতিরোধী খাবার খান
https://www.medicalnewstoday.com/articles/37136
https://www.cdc.gov/cancer/breast/basic_info/risk_factors.htm
https://www.nhs.uk/conditions/breast-cancer/causes/সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
গর্ভবতী মায়ের যত্ন| গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয়
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
পিরিয়ড বন্ধ হওয়া গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ।
এছাড়া নিচের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে আপনি গর্ভবতী কিনা এটা পরীক্ষা করিয়ে নিন-
তাপমাত্রা বৃদ্ধি
নিষেকের পর, একটি নতুন জীবনকে জায়গা দেওয়ার জন্য শরীর নিজেকে প্রস্তুত করে তোলে। এসময় শরীরের তাপমাত্রা অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। যদি টানা ১৮ দিন শরীরের তাপমাত্রা এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করান।
স্তনে ব্যথা অনুভব
গর্ভধারণের পর ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে, গর্ভবতী মা স্তনে ব্যথা অনুভব করেন। এ সময় স্তনবৃন্ত গাঢ়তর দেখায় এবং স্তন অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। পুরো প্রেগন্যান্সির সময় জুড়েই স্তনের আকারে পরিবর্তন হয়ে থাকে। কখনো কখনো নিপল চেপে ধরলে এক ধরনের তরল বেরিয়ে আসে।
অবসাদ এবং ক্লান্তি
বাড়ন্ত শিশুকে পুষ্টি দেওয়ার জন্য গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত রক্ত উৎপন্ন হয়। এজন্য এসময় অল্পতেই ক্লান্তি এসে যায়। প্রথম সপ্তাহে এই ক্লান্তিভাব সবচেয়ে বেশি হয়।
বমি বমি ভাব
প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকে, আপনি অস্বস্তি এবং বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন। বমিভাবের বিড়ম্বনা থেকে মুখে অতিরিক্ত তরল সৃষ্টি হয়। এর ফলে মুখ থেকে লালা পড়তে থাকে। বমির ঔষধ খাওয়ার চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে বমি দূর করুন।
গন্ধের প্রতি বিতৃষ্ণা
গর্ভধারণের শুরুর দিকে আপনি মুখে অদ্ভুত বাজে স্বাদ অনুভব করতে পারেন। এসব উপসর্গ আপনাকে জানান দেয়, আপনি মাতৃত্বের পথে যাত্রা শুরু করেছেন।
পেট ফোলা
অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ এসময় পরিপাক কাজে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অন্ত্রে গ্যাস আটকে থাকে। এতে পেট ফুলে অপ্রীতিকর বাতকর্ম এবং ঢেঁকুর হতে পারে।
প্রস্রাব করার তাড়না
শিশু যত বড় হয়, জরায়ুর আকারও তত বাড়ে এবং মূত্রথলির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে থাকে। ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের তাড়না দেখা দেয়।
মুড সুইং
গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, যা মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলোকে প্রভাবিত করে। এর ফলে কেউ কেউ বেশি উচ্ছ্বাসপ্রবণ হয়ে পড়েন আবার অনেকে ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন।
মাথা ব্যথা
গর্ভাবস্থায় রক্তবাহী নালীগুলো স্ফীত হয়ে যায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে মাথা ব্যাথার সৃষ্টি হয়। গর্ভাবস্থায় লিগামেন্ট এবং জয়েন্টের প্রসারণের ফলে মেরুদণ্ডেও ব্যথা হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
প্রোজেস্টেরোন হরমোন নিঃসরণ কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী। পিরিয়ড মিস করার পর এক সপ্তাহের বেশী সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন।
আরো পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
শ্বাসকষ্ট
দুটি জীবনের শ্বাস নেওয়ার জন্য, গর্ভাবস্থায় আপনার আরো বেশী অক্সিজেন এবং রক্তের প্রয়োজন হয়। তাই, এসময় আপনার শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় মুখে ব্রণ বা পিম্পলসও দেখা দেয়।
উদ্ভট স্বপ্ন
সাধারণত গর্ভে সন্তান এলে গর্ভবতী মায়েরা অতিরিক্ত পরিমাণে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। গর্ভবতী হয়েছেন এমন স্বপ্নই দেখেন তারা। এসময় তাদের দৃষ্টি বিভ্রমও হয়।
খাবারে অরুচি
শরীরে হরমোনের তারতম্যের কারণে এসময় খাবারে অরুচি সৃষ্টি হয়।
রক্তপাত বা স্পটিং
জরায়ুতে ভ্রূণ ইমপ্ল্যান্টেশনের সময় রক্তপাত হতে পারে। ওভুলেশনের এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ ইমপ্ল্যান্টেশন হয়ে থাকে। স্পটিং হওয়ার পরে বাড়িতে কিট এনে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিন।
গর্ভাবস্থায় করণীয়
শিশুর জন্মপূর্ব সময়ে (Pre-natal) মাল্টি-ভিটামিন খাওয়া শুরু করুন, খাদ্যাভাসের দিকে নজর দিন। অনেক মা মনে করেন ভিটামিন ওষুধ খেলে বাচ্চা বড় হয়ে যায় এবং সিজারের সম্ভাবনা বাড়ে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ভিটামিন মায়ের শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে এবং হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। ক্রনিক অসুখ (ব্লাড প্রেসার, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস ইত্যাদি) থাকলে, তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যত্নবান হোন।
গর্ভাবস্থায় অন্যান্য করণীয় কাজ:
পরিমিত পরিমাণ পানি পান
গর্ভাবস্থায় মহিলারা প্রায়শই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যান। পর্যাপ্ত পরিমাণ পান পান করে, আপনি কেবল ডিহাইড্রেশনই প্রতিরোধ করছেন না, পাশাপাশি মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকিও হ্রাস করছেন।
ডায়েট
আপনার ডায়েটে ফলিক অ্যাসিড বাধ্যতামূলক করুন। ফলিক এসিড আপনার গর্ভের সন্তানের স্নায়ুর বিকাশে সাহায্য করে। খাওয়া এবং ব্যায়ামের মধ্যে একটি ভাল ভারসাম্য বজায় রাখুন। কেগেল ব্যায়াম করার জন্য নিয়মিত সময় দিন। কেগেল পেশী যোনি অঞ্চলে থাকে যা আপনাকে আপনার মূত্রত্যাগ এবং অন্যান্য গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে গর্ভকালীন ব্যথা থেকেও মুক্তি পাবেন। এসময় হালকা কাজ করলে ক্ষতি হবে না। তবে ভারী কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
ভ্রমণে সতর্কতা
ভ্রমণ করার সময় খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। অল্প দূরত্বের ভ্রমণ বা দূরের সফরে যাওয়া, যাই হোক না কেন, আপনার যাত্রা শুরু করার আগে আপনার কাছে প্রয়োজনীয় সমস্ত ওষুধ এবং গিয়ার রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
দুপুরে খাওয়ার পর ন্যাপ বা হালকা ঘুমিয়ে নিন। এতে আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় হবে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় অনিদ্রা দূর করার ১০টি ঘরোয়া উপায়
গর্ভাবস্থাকে স্মরণীয় করুন
একটি ছোট ডায়েরি লেখা শুরু করুন। প্রতিদিন আপনি কি করেছেন এবং কেমন অনুভব করেছেন-তা লিখুন।
ডাক্তারি পরামর্শ
কোন ব্যথা বা যন্ত্রণা অথবা জ্বরের ক্ষেত্রে প্রথমে আপনার ডাক্তারকে যোগাযোগ করুন। চিকিৎসকের সাথে কথা বলার আগে কোন ওষুধ, এমনকি মলম বা লোশনও ব্যবহার করবেন না।
বিশেষ রোগ-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
এ সময় নিয়মিত সাবান দিয়ে ভালোভাবে গোসল করুন এবং হাত-পায়ের নখ কেটে ছোট করে রাখুন। গর্ভকালে মায়েদের দাঁতগুলো বেশ নরম হয়ে যায়, তাই দাঁত ও মাড়ির বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
পিচ্ছিল স্থানে হাঁটা যাবে না এবং সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভবতী মায়েদের অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক, সহজে পরিধানযোগ্য ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিৎ। সঠিক মাপের এবং নরম জুতো পরুন।
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত এবং সমাধান
রক্তপাত ঘটার পর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে প্রথমে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। এর মাধ্যমে গর্ভস্থ সন্তান জীবিত নাকি মৃত সেটা জানা যাবে। জীবিত সন্তান গর্ভে থাকার পরও রক্তপাত হতে পারে, যাকে বলে ‘থ্রেটেন্ড মিসক্যারেজ’। এসব ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করা যায় এবং সুস্থ শিশু ভূমিষ্ঠ করা যায়। আল্ট্রাসনোগ্রাম ছাড়াও রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ রয়েছে কি না।
অনেক সময় আঘাত বা পানি বেশি থাকার কারণে প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল সময়ের আগেই জরায়ু থেকে সরে আসে। এটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, যাকে ‘প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন’ বলা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে গর্ভফুল জরায়ুর মুখের ওপর বা জরায়ু মুখের খুব কাছাকাছি ইমপ্লান্টেড হয়ে থাকে। ওই সময় এসব রোগীকে হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সির রোগী হিসেবে শনাক্ত করে চিকিৎসা করা হয়। নিরাপদ ডেলিভারির জন্য আগে থেকে তিন থেকে চারজন রক্তদাতা রেডি করে রাখুন।
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত এড়াতে-:
গর্ভবতী মায়ের টিকা
গর্ভাবস্থায় যে ৫ ধরণের টিকা নেয়া নিরাপদ :
১। ফ্লু(flu) এর টিকা
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CCD) ফ্লু(flu) এর ঋতুতে গর্ভবতী নারীদের ফ্লু শট নেয়ার পরামর্শ দেয়। গর্ভাবস্থায় ফ্লুতে আক্রান্ত হলে নিউমোনিয়ার মত জটিল অবস্থারও সৃষ্টি করতে পারে।
২। টিটেনাস/ডিপথেরিয়া/পারটুসিস টিকা(Tdap)
টিটেনাস রোগের ঝুঁকি এড়াতে গর্ভবতী মহিলাদের টিটানাস টক্সয়েড ভ্যাকসিন নেওয়া উচিৎ।
Tdap গর্ভাবস্থার যে কোন সময়ই নেয়া যায়। তবে গর্ভকালের ২৭-৩৬ মাসের মধ্যে নেয়াটাই উপযুক্ত সময়।
৩। হেপাটাইটিস বি এর টিকা
গর্ভবতী নারী যদি হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত হন, তাহলে ডেলিভারির সময় এই ইনফেকশন নবজাতকের মধ্যে ছড়াতে পারে। যথাসময়ে চিকিৎসা করা না হলে শিশুর পরিণত বয়সে যকৃতের ক্রনিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
CCD এর মতে সকল গর্ভবতী নারীরই হেপাটাইটিস বি শনাক্তকরণের পরীক্ষা করানো উচিৎ। কারণ অনেকে লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
৪। হেপাটাইটিস-এ এর টিকা
পানি ও খাবারের মাধ্যমে হেপাটাইটিস-এ তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে জ্বর, ক্লান্তি ও বমি ভাব দেখা দেয়। হেপাটাইটিস-এ এর সংক্রমণ গর্ভের সন্তানের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
৫। নিউমোকক্কাল ভ্যাক্সিন
ডায়াবেটিস অথবা কিডনি রোগে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
কোন কোন টিকা গর্ভাবস্থায় নেওয়া যাবে না:
কিছু টিকা রয়েছে, যা গর্ভকালীন সময়ে নেওয়া রীতিমতো বিপজ্জনক। মাম্পস, হাম, চিকেন পক্স, বিসিজি, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, টাইফয়েডের টিকা গর্ভাবস্থায় নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
গর্ভবতী মায়ের দৈনিক খাদ্য তালিকা
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ খাবার খান। আপনার গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্কের ও চোখের গঠনের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। গর্ভের তৃতীয় ট্রাইমিস্টার বা ৭ম মাস থেকে ৯ মাস বা বাচ্চা জন্মানোর আগ পর্যন্ত সময়টাতে কোষ্ঠকাঠিন্য হবার বেশি আশঙ্কা থাকে। আদা চা গর্ভবতী মায়েদের এ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে দারুণ সহায়ক। হজমশক্তি বাড়াতে এর পাশাপাশি নিয়মিত আঁশযুক্ত ফল ও শাকসবজি খান।
গর্ভবতী মহিলাদের কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা-
ডিম
ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা গর্ভের শিশুর বৃদ্ধির জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। একটি ডিমে একশো বারো মিলিগ্রাম কোলাইন থাকে যা গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে।
ফর্টিফায়েড ফুড
হরমোনের পরিবর্তনের ফলে গর্ভাবস্থায় অপ্রত্যাশিত ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। এ চাহিদা মেটানোর জন্য খাদ্যশস্য (গমবীজ, তেলবীজ, ভূট্টাদানা ইত্যাদি ) খুবই উপযোগী।
কলা
কলা ফোলিক এসিড, ভিটামিন বি ৬, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়ামের ভালো উৎস। উপরন্তু, কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এবং ইনস্ট্যান্ট শক্তিবৃদ্ধিকারী। পুষ্টি চাহিদা মেটাতে গর্ভাবস্থায় দিনে তিন থেকে চারটি কলা খান।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ফোলিক এসিড, ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন বিদ্যমান থাকে। যা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয়।
মাছ
গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ট্রাইমিস্টারে প্রচুর মাছ খাবেন, কারণ এটি আয়োডিনের চাহিদা মেটাতে খুব সহায়ক। এ সময়ে বাচ্চার থাইরয়েড গ্ল্যান্ড কাজ করা শুরু করে। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার জন্য আয়োডিন অতীব প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার মতো মারাত্মক জটিলতার বিরুদ্ধেও সুরক্ষা প্রদান করে।
বাদামের মাখন
কাজুবাদাম, নারকেল এবং ব্রেজিল বাদাম–এই সব থেকে একটি স্বাস্থ্যকর মাখন তৈরি করা যায়। গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য এ ধরনের অসম্পৃক্ত চর্বি অত্যন্ত উপকারি।
বাদাম নিয়ে আরো পড়ুনঃ হরেক রকম বাদামে হরেক রকম স্বাদ।
মটরশুটি
মটরশুটিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার রয়েছে। এতে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারি। মটরশুঁটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও দারুণ সহায়ক।
এসময় গর্ভস্থ শিশুর দেহে লৌহের চাহিদা মেটানোর পর মায়ের রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দেয়। এর ফলে দুর্বলতা, মানসিক অবসাদ বা ক্লান্তি, বুক ধড়ফড় করা, মাথাঘোরা ইত্যাদি দেখা যায়। বাড়তি পুষ্টি চাহিদা মেটাতে কলিজা, কালো ও সবুজ কচুর শাক, বিট, লেটুসপাতা, হলুদ ইত্যাদি খান।
খাদ্য গ্রহণে সতর্কতা-
গর্ভাবস্থায় কাঁচা ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে সালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে।
অপাস্তুরিত দুধ বা কাঁচা দুধে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই ভালো করে না ফুটিয়ে দুধ পান করবেন না।
লিভারে রেটিনল থাকে; যা প্রাণীজ ভিটামিন-এ এর উৎস। তবে অতিরিক্ত কলিজার তৈরি খাবার গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কফি ক্লান্তি দূর করার জন্য কার্যকর হলেও গর্ভাবস্থায় কফি খাওয়া যথাসম্ভব পরিহার করুন। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে কম ওজনের শিশু জন্ম গ্রহণ করে। মিসক্যারেজের মত ঘটনাও ঘটতে পারে।
সামুদ্রিক মাছ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। কিন্তু অধিক পরিমাণে খেলে গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। কারণ সামুদ্রিক মাছে পারদ জাতীয় পদার্থ থাকে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কাঁচা বা আধা পাকা পেঁপে খাওয়া বিপদজনক। এতে গর্ভপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
গর্ভবতী মায়ের ওজন
মায়ের স্বাস্থ্যকর ওজন—মা আর শিশু দুজনের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়ের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম হলে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়, শিশুর ওজন কম হয়। এ ছাড়া গর্ভকাল পূর্ণ হওয়ার আগেই সন্তানের জন্ম হয়ে যাবার ঝুঁকি থাকে মায়ের ওজন কম থাকলে। কম ওজন নিয়ে কিংবা পূর্ণ গর্ভকাল পেরোনোর আগে জন্মানো শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে কম হয়। নানান জটিলতায় ভোগে এই শিশুরা।
অন্যদিকে মায়ের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বেড়ে গেলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন জটিলতা বাড়ে। মায়ের উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-একলাম্পসিয়া, একলাম্পসিয়া ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। গর্ভস্থ শিশু অত্যধিক বড় হয়ে যেতে পারে, প্রসবের সময় শিশু বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে (অবস্ট্রাক্টেড লেবার), প্রসব হতে খুব বেশি সময় লাগতে পারে (প্রলম্বিত প্রসব)। প্রসবের সময় শিশুর মাথা বের হয়ে ঘাড় আটকে যেতে পারে, এমনকি প্রসবকালীন শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। ওজন বাড়তি থাকলে প্রসব–পরবর্তী সময়ে মায়ের অত্যধিক রক্তক্ষরণ হতে পারে, যা মাকেও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের মাসে এক কেজি বা প্রতি দুই সপ্তাহে আধা কেজি ওজন বাড়া সুস্থতার লক্ষণ। গর্ভের শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে মায়ের বাড়তি এনার্জির প্রয়োজন। তাই গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমিস্টারে এসে আপনি বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাবেন। তবে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হয়ে থাকলে ওজনে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করুন।
গর্ভবতী মায়ের ঘুমানোর নিয়ম
চিকিৎসকরা গর্ভবতী নারীদের বাম পাশ ফিরে ঘুমাতে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কেন?
গর্ভকালে ভ্রুণ দিনদিন বড় হতে থাকে, তাই এটি স্বাভাবিকভাবেই তার মায়ের অভ্যন্তরীণ অর্গান ও রক্তনালীতে ক্রমান্বয়ে বেশি চাপ ফেলে। শিশু যখন ব্লাডারে অথবা অন্ত্রে লাথি মারে, তখন গর্ভবতী মা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এজন্য বাম পাশ ফিরে শোয়াই সব থেকে বেশি নিরাপদ। এতে রক্ত সঞ্চালন সহজতর হয়, গর্ভের শিশুর পুষ্টি জোগাতে আপনার হার্ট থেকে অমরা/গর্ভফুলে রক্ত সরবরাহের জন্য সহজ পথ তৈরি হয়। এভাবে শোয়াতে আপনার লিভার, অতিরিক্ত ওজনবিশিষ্ট শরীরের চাপ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
গর্ভাবস্থায় চিৎ বা উপুড় হয়ে শোবেন না। যখন উপুড় হয়ে শোবেন পাকস্থলী তখন আপনার প্রসারিত জরায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করবে। আপনি যদি চিত হয়ে ঘুমান তাহলে হয়তো আপনার নিঃশ্বাস নিতে বেশি কষ্ট হবে।
নিরাপদ গর্ভধারণে আরো কিছু টিপস্-
পেট ও পিঠকে একটু বেশি সাপোর্ট দিতে দুই হাঁটুর মাঝে একটি বালিশ ব্যবহার করুন।
শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পেতে আপনার বুকের পাশেও একটি বালিশ আলতো করে রাখতে পারেন। এতে আপনার পাকস্থলী এসিডিটি থেকে মুক্ত থাকবে আর আপনার হার্ট এ জ্বালাপোড়াও কম অনুভব হবে।
এ কৌশল অবলম্বন করলে ঘুমন্ত অবস্থায় আপনার বডি আপনা-আপনিই আরামদায়ক পজিশনে থাকবে নতুবা আপনাকে জাগিয়ে দেবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমোনো আপনার জন্য এখন খুব জরুরি। গর্ভাবস্থায় দিনের বেলা কমপক্ষে দু-ঘণ্টা ঘুম বা বিশ্রাম এবং রাতে কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। ঘুমের অভাবে আপনার প্রি-এক্লাম্পসিয়া বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এটি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এবং পালমোনারি হাইপারটেনশনেরও আশঙ্কা তৈরি করে।
গর্ভবতী মায়ের আ’মল
ভ্রুণ অবস্থা থেকে মায়ের যাবতীয় আমল ও আখলাক গর্ভে থাকা সন্তানের ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। তাই গর্ভবতী মায়ের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে, গোনাহ ও আল্লাহর নাফরমানি থেকে নিজেকে বিরত রাখা। এ সময়ে পরনিন্দা-পরচর্চা করা, ঝগড়া করা, গালা-গালি করা ও অন্যান্য মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা বাঞ্চনীয়।
এছাড়া করণীয়-
১. অসুস্থতা, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে ধৈর্যহারা হবেন না। ‘এই সময়টার প্রতিটি মুহূর্ত আপনার জন্য জিহাদতূল্য ইবাদত’। নবীজী ﷺ চমৎকার বলেছেন, الصَّبْرُ ضِيَاءٌ সবর হল জ্যোতি। (মুসলিম: ২২৩)
২. যখনি মা হওয়ার আনন্দে পুলকিত হবেন তখনি আল্লাহর শোকর আদায় করুন। আল্লাহ তাআলা বলেন, واشكروا لي ولا تكفرون আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (সূরা বাকারা: ১৫২)
৩. ওযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন: কেননা দৈহিক সুস্থতা ও আত্মিক প্রশান্তির ক্ষেত্রে ওযুর ভূমিকা অপরিসীম।
৪. এসময় বেশি বেশি কুর’আন তিল’ওয়াত করুন। প্রায় ২০ তম সপ্তাহে গর্ভের বাচ্চা শোনার সক্ষমতা অর্জন করে। মা প্রতিদিন কিছু কুর’আন তিল’লওয়াত করে বাচ্চার মাঝে কুর’আনের মাঝে সম্পর্ক জুড়ে দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।
বুযুর্গগণ কতিপয় সূরার বিষয়বস্তুর প্রতি লক্ষ রেখে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন—
গর্ভবতী মায়ের সাবধানতা
গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা প্রসবের পর, যেকোনো সময় যদি খিচুনি দেখা দেয় তবে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষায়িত হাসপাতালে মাকে ভর্তি করাতে হবে। খিচুনি একলামসিয়ার প্রধান লক্ষণ। দ্রুত পদক্ষেপ ও চিকিৎসায় বাচ্চা এবং মা দু’জনের জীবনই রক্ষা পাবে ইনশা’আল্লাহ।
গর্ভাবস্থায় যদি কেঁপে কেঁপে ভীষণ জ্বর আসে এবং প্রসাবের সময় জ্বালাপোড়া হয়, তবে তা মূত্রনালির সংক্রমণের ইঙ্গিত বহন করে। সময়মতো উপযুক্ত চিকিৎসা করালে অল্প সময়ে এ জটিলতা দূর হয়ে যায়।
প্রসবব্যথা যদি ১২ ঘণ্টার বেশি হয় অথবা প্রসবের সময় যদি বাচ্চার মাথা ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ বের হয়ে আসে, তবে বাসা-বাড়িতে প্রসবের চেষ্টা না করে সবারই উচিৎ মাকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া।
গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর মায়ের রক্তচাপ লক্ষ রাখা জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় মায়ের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় এবং এটি একলামসিয়ার অন্যতম লক্ষণ। তাই যাঁরা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, তাদের উচিৎ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং নিজ ও বাচ্চা উভয়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা।
আপনি ঝুঁকলে, গর্ভস্থ আপনার পেটের উপর চাপ দেয়। এটি অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণ হতে পারে। এ অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে যায় এবং আপনার জিহ্বায় একটি অপ্রীতিকর স্বাদ ও আপনার খাদ্যনালীতে জ্বালার সংবেদন তৈরি করে।
এজন্য-
আপনার মাথা, ঘাড় এবং পিঠ একই সরল রেখায় রাখুন। দুই পা সর্বদা একই দিকে নির্দেশ করে রাখুন এবং উভয় পায়ে আপনার ওজন সমানভাবে ছড়িয়ে দিন। আপনার শরীরে টান প্রতিরোধ করতে লো-হিলযুক্ত জুতো বেছে নিন। গর্ভাবস্থায় কোনও কিছু জিনিস তোলার সময় আপনার পিঠ সোজা রাখুন এবং কেবল আপনার হাঁটু ও নিতম্ব বাঁকান।
প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে পেটের এক্সরে শিশুর birth defect এর কারণ হতে পারে। যদি কোনো ইমার্জেন্সি কারণে X-Ray করতে বলা হয়, সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারকে প্রেগন্যান্সির ব্যাপারে জানান।
পূর্বে কোনো এবরশন বা MR / D&C করিয়ে থাকলে ডাক্তারকে জানান। এর আগে কোনো মৃত শিশু জন্ম দিলে বা জন্মের পর কোনো শিশুর মৃত্যু ঘটলেও-সেই বিষয়টি অবগত করুন। ১৮ থেকে ২২ সপ্তাহের মধ্যে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারেন, যেটাকে anomaly scan বলে। এর মাধ্যমে শিশুর জন্মগত ত্রুটি নির্ণয় করা সম্ভব
সকালে ও বিকেলে কিছু সময়ের জন্য স্বাস্থ্যকর ও মনোরম পরিবেশে হাঁটাহাঁটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারি। এতে শরীর সুস্থ ও মন প্রফুল্ল থাকে। তাই সময় পেলে ফুলের বাগান, লেকের পাড়, পার্ক-এসব স্থানে একটু বেড়িয়ে আসুন।
Source:
https://www.womenshealth.gov/pregnancy/youre-pregnant-now-what/stages-pregnancy
https://www.medicinenet.com/pregnancy/article.htm
https://www.webmd.com/baby/guide/exercise-during-pregnancy
https://www.mdpi.com/1660-4601/17/5/1771/htm
https://www.healthline.com/health/pregnancy
https://www.nhs.uk/conditions/pregnancy-and-baby/ সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
কাঁচা / পাকা আমের উপকারিতা |
আমের বিভিন্ন জাত
পৃথিবীতে অসংখ্য জাতের আম রয়েছে। এর মধ্যে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা,ক্ষীরভোগ, মোহনভোগ, রাজভোগ, রানিভোগ, চিনি মিছরি, জগৎমোহিনী, রাঙ্গাগুড়ি, মিশ্রিকান্ত, বোম্বাই, পাহাড়িয়া, কাকাতুয়া, চম্পা, সূর্যপুরি, কাঁচামিঠা, আশ্বিনা, আম্রপালি, শ্যামলতা, বাগানপল্লি, দুধসর, কোহিতুর, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, আলফানসো, কারাবাউ, গোপাল খাস, কেন্ট,পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, লখনা, কলাবতী ইত্যাদি বিখ্যাত। একেক জাত, একেক মন ভোলানো ঘ্রাণ, স্বাদের ভিন্নতা এবং বৈশিষ্ট্যের জন্য আমাদের কাছে প্রিয়। মিষ্টতা ও স্বাদে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি অনন্য।
পুষ্টি উপাদান
আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, বি৬, কে, ফলিক অ্যাসিড, প্রোটিন ও ফাইবার রয়েছে। এছাড়াও আম ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কপার, বিটা ক্যারোটিন ইত্যাদি খনিজে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ৭০ কিলোক্যালরি কার্বোহাইড্রেট, ০.৫ গ্রাম চর্বি, ১.৮০ গ্রাম ফোলেট, ০.১২৪ মিলিগ্রাম রাইবোফ্লোভিন, ০.০৫৭ মিলিগ্রাম থায়ামিন, ১০ মিলিগ্রাম কপার, এবং ৯ মিলিগ্রাম ম্যাঙ্গানিজ বিদ্যমান।
কাঁচা আমের উপকারিতা
গ্রীষ্মকালীন ফল আম। গরমে দাবদাহে এক ফালি কাঁচা আম মনে নিয়ে আসে প্রশান্তি। কাঁচা আমের জুস এবং আচার খুবই মুখরোচক। এমনকি ডালের সঙ্গে রান্না করেও খাওয়া যায় কাঁচা আম। কেউ আবার কাঁচা আমের ভর্তা খুব পছন্দ করেন।
আসুন জেনে নেই কাঁচা আমের উপকারিতা-
ফ্যাট মেটাবলিজমে
কাঁচা আম ওজন কমানোর জন্য খুব কার্যকর ভেষজ প্রতিষেধক। আমে প্রচুর পরিমাণ এনজাইম রয়েছে, যা শরীরের প্রোটিনের অণু গুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা আমের উপকারিতা
অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের সকালে উঠার পর বমি বমি ভাব হয়। কাঁচা আম গর্ভবতী মহিলাদের মর্নিং সিকনেসের সমস্যা দূর করে। গর্ভাবস্থায় মায়েরা কাঁচা আম খেলে গর্ভের সন্তানের অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতা বেশি থাকে। ফলে জন্মানোর পর খুব কমই রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা। মেনোপোজ হওয়া নারীর আয়রনের ঘাটতি পূরণেও কাঁচা আম বেশ উপকারি।
ঘামাচির সমস্যা দূর করতে
গরমের সময় ঘামাচির সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে ভালো উপায় কাঁচা আম খাওয়া। কাঁচা আম সানস্ট্রোকও প্রতিরোধ করে।
লিভারের সমস্যা প্রতিরোধে
যকৃতের রোগ নিরাময়ে কাঁচা আম খুব উপকারি। কাঁচা আম শরীরে পটাসিয়ামের অভাব পূরণ করে লিভার ভালো রাখে। এটি বাইল এসিড নিঃসরণ বাড়ায় এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও প্রতিরোধ করে।
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে
কাঁচা আম রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর করে। এটি রক্তনালীসমূহের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং নতুন রক্ত কনিকা গঠনে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
কাঁচা আম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আমে উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন রয়েছে, যা জীবাণু থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়। কাঁচা আম স্কার্ভি প্রতিরোধ করে ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায়। কাঁচা আম কিডনির সমস্যা প্রতিরোধেও সাহায্য করে এবং অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে
কাঁচা আম রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেলের মাত্রা কমায় এবং ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। এটি কোলন, প্রোস্টেট, ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়।
যৌনশক্তি বাড়াতে
কাঁচা আম যৌনশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর ফিট রাখে। কাঁচা আম খাওয়ার ফলে পুরুষের শুক্রাণুর গুণগত মান উন্নত হয় এবং সেক্স ক্রোমজোমের কর্মক্ষমতা বাড়ে।
ত্বকের যত্নে কাঁচাআম
কাঁচা আমক্লিনজার হিসেবে ত্বকের উপরিভাগে ব্যবহার করা হয়। এটি লোমকূপ পরিষ্কার করে এবং ব্রণ দূর করে। বার্ধক্যের ছাপ রোধে আমের রস বেশ কার্যকর। এটি চুল ও ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
অবসাদ দূর করতে
গরমে স্বাভাবিকভাবে ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে এ ক্লান্তিভাব দূর হবে। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ প্রতিরোধেও কাঁচা আম অনেক কার্যকর।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে
কাঁচা আম রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। চোখের চারপাশের শুষ্কভাবও দূর করে।
শরীর গঠনে কাঁচা আমের উপকারিতা
প্রতিদিন আম খেলে দেহের ক্ষয় রোধ হয় ও স্থূলতা কমে যায়। এটি শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াতেও অনেক সহায়ক।
শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে
গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করবে।
পাকা আমের স্বাস্থ্যগুণ
উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য পাকা আম খুব উপকারি। চলুন, দেখে নিই পাকা আম কিভাবে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়-
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
পাকা আমে বিদ্যমান উচ্চমাত্রায় পেকটিন আঁশ কিডনির ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। পাকা আম আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কারেও সহায়তা করে।
ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
ওজন বাড়াতে পাকা আম বেশ উপকারি। পাকা আমে থাকা বায়োটিক উপাদান যেমন স্টার্চ, এলডিহাইড ইত্যাদি ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে।
নিয়মিত পাকা আমের জুস, মিল্কশেক, খেলে ওজন বাড়ে।
ত্বকের যত্নে পাকা আম
পাকা আম কোলাজেন প্রোটিন তৈরি করতে সহায়তা করে। মুখের ও নাকের উপর তৈরি হওয়া ব্ল্যাকহেড দূর করতেও পাকা আম দারুণ কার্যকর। নিয়মিত ১০০ গ্রাম পাকা আম খাওয়ার ফলে আপনার মুখের এ কালো দাগ দূর হয়ে যাবে ইনশা’আল্লাহ। পাকা আম ত্বকে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলে লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার হয়। এটি ত্বক উজ্জ্বল, সুন্দর ও মসৃণ করে।
অ্যাজমা প্রতিরোধে
উচ্চ মাত্রায় বিটা ক্যারোটিন থাকার ফলে পাকা আম অ্যাজমা প্রতিরোধে সহায়ক।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
পাকা আমে বিদ্যমান গ্লুটামিক অ্যাসিড মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে মনোযোগ বাড়িয়ে দেয়। তাই পরীক্ষার সময় ও মস্তিষ্কের চাপ যখন বেশি থাকে, তখন আম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
রসালো ফল আম দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন মিষ্টি। তাই এর প্রতি বরাবরই মানুষের আকর্ষণ বেশি। পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে।
আমের আঁটির উপকারিতা
সাধারণত আমরা আম খেয়ে আঁটিকে অকেজো মনে করে ফেলে দেই। কিন্তু এই আঁটির উপকারিতা জানলে আপনাকে অবাক হতে হবে।
আসুন জেনে নেই আমের আঁটির যত গুণ-
চুলের যত্নে
খুশকির সমস্যা সমাধানে আমের আঁটি খুব উপকারি। আমের আঁটি শুকিয়ে গুঁড়ো করে পানিতে মিশিয়ে তা স্ক্যাল্পে লাগান। এটি মাথার ত্বককে শুষ্ক রাখতে সাহায্য করবে। ফলে চুল ওঠার সমস্যাও দূর হয়ে যাবে।
ওজন কমাতে
অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা থাকলে কাঁচা আমের আঁটি খেতে পারেন। ফ্যাট বার্ন প্রতিরোধে আমের আঁটি অত্যন্ত কার্যকর।
ডায়রিয়ার প্রতিকারে
ক্রনিক ডায়রিয়া সারাতে আমের আঁটি দারুণ উপকারি। আমের আঁটি শুকিয়ে নেয়ার পর গুঁড়া করে নিন। ১ বা দুই গ্রাম এই গুঁড়া পানি বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। নিয়মিত সেবনে দ্রুত ফল পাবেন ইনশা’আল্লাহ।
এছাড়া কাঁচা আমের আঁটি ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণেও কাঁচা আমের আঁটি খেতে পারেন।
আম পাতার ঔষধি গুণ
আম পাতায় মেঞ্জিফিরিন নামক সক্রিয় উপাদান থাকে যা অপরিমেয় স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কচি আম পাতা রান্না করে খাওয়া হয়।
আম পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো সম্পর্কে জেনে নিই-
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
আম পাতা হাইপারটেনশনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালীকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ কাপ আম পাতার চা পান করলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা লাঘব হবে। আম গাছের পাতা পরিষ্কার করে সারারাত পানিতে রাখুন। পরের দিন ঐ পানি ছেঁকে পান করুন। এতে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শ্বসনতন্ত্রের সমস্যা নিরাময়ে
নিয়মিত আম পাতার ফুটানো পানি পান করলে ঠান্ডা, ব্রংকাইটিস ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (৪১-৬০) কম। আম পাতায় ট্যানিন এবং অ্যান্থোসায়ানিন থাকে যা ডায়াবেটিস নিরাময়ে সাহায্য করে। ৫-৬টি আম পাতা ধুয়ে একটি পাত্রে সেদ্ধ করে ঐ পান করলে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
কান ব্যথা উপশমে
কানের ব্যথা নিরাময়ে আম পাতার রস খুব ভালো প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। আম পাতায় হালকা তাপ দিয়ে কানের ছিদ্রের উপর লাগান। এতে ব্যথা কমে যাবে।
কিডনির পাথর দূর করে
আম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন এবং পানির সাথে মিশিয়ে সকালে পান করুন। এর ফলে কিডনি পাথর খুব সহজেই শরীর থেকে বের হয়ে যাবে।
গলা ব্যথা দূর করে
গলার ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে আম পাতা। কিছু আম পাতা পোড়ান এবং এর থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া শ্বাসের সাথে গ্রহণ করুন। এতে আপনার গলা ব্যথার সমস্যা কমবে।
গেঁটে বাত নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর আম পাতা। কিছু কচি আম পাতা পানিতে দিয়ে পাতার বর্ণ হলুদ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। নিয়মিত সেবনে ভালো ফল পাবেন।
কিছু আম পাতা পানি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন। আঁচিলের উপরে এটি প্রতিদিন লাগালে আঁচিল দূর হবে। আঘাত প্রাপ্ত স্থানে রক্ত পড়া বন্ধ করার জন্যও এই পেস্ট ব্যবহার করা যায়। আম পাতার ছাই দাঁত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় আমের ব্যবহার
কচি আম পাতা ও জাম পাতার রস (২/৩ চা চামচ) একটু গরম করে খেলে আমাশয় সেরে যায়। আমের শুকনো মুকুল বেটে খেলে পাতলা পায়খানা, পুরনো এবং প্রস্রাবের জ্বালা-যন্ত্রণা উপশম হয়। কচি আমপাতা চিবিয়ে তা দিয়ে দাঁত মাজলে অকালে দাঁত পড়ার আশঙ্কা থাকে না।
আমের কুশি থেঁতো করে পানিতে ভিজিয়ে ছেঁকে এই পানি শুষ্কচুলের গোড়ায় লাগালে চুল পরাকমে। তবে ঐ সময় মাথায় তেল ব্যবহার না করাই ভালো। জ্বর, বুকের ব্যথা, বহুমূত্র রোগের জন্য আমের পাতার চূর্ণ ব্যবহৃত হয়।
আম খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ কাঁচা আমের কষ মুখে লাগলে অথবা পেটে গেলে মুখ, গলা ও পেটে সংক্রমণ হতে পারে। আম অনেকের দেহে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। কাঁচা আম পাকাতে অনেক সময় ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, যা আমের খোসায় রয়ে যায়। অনেক সময় এটিও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
উচ্চ মাত্রায় চিনি থাকায়, পাকা আম রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত পরিমাণে পাকা আম খাওয়া পরিহার করা উচিৎ।
রসনার পরিতৃপ্তি, শরীরের পুষ্টি যোগান, এবং জাতীয় অর্থনীতিতে আমের অবদান অনস্বীকার্য। আম উৎপাদনকারী এলাকায় মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে যায়। এ সময় বেশি মধু আহরণের দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়। আমের উপকারিতার কারণে, গ্রীষ্ম প্রধান দেশে ফলের মধ্যে আম সবার সেরা।
Source:
https://www.bbcgoodfood.com/howto/guide/health-benefits-mango
https://www.medicalnewstoday.com/articles/275921
https://pharmeasy.in/blog/health-benefits-of-mangoes/amp/ সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
গাজরের পুষ্টি উপাদান
গাজরের নানাবিধ ভেষজ গুণাগুণ
আরো পড়ুনঃ ফুসফুসে ইনফেকশন হলে কি করবেন
গাজরের অপকারিতা
https://food.ndtv.com/food-drinks/8-amazing-health-benefits-of-carrots-from-weight-loss-to-healthy-eyesight-1767963?amp=1&akamai-rum=offসর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
কলার উপকারিতা | কলা খেলে কি হয়
কলার পুষ্টি উপাদান
মানসিক অবসাদ কমায়
শরীরকে ডিটক্সিফাই করে
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে
কিডনি সুস্থ রাখে
শরীরে শক্তির যোগান দেয়
হজমে সহায়তা করে
পাকস্থলির আলসার প্রতিরোধ করে
ত্বকের যত্নে কলা
শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৃদ্ধি করে
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায় কলার ব্যবহার
হাড় গঠনে কলার উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কলার ভূমিকা
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কলা
মাসিকের যন্ত্রণা কমাতে কলার উপকারিতা
মর্নিং সিকনেস সমস্যায় কলা
ওজন কমাতে
অনিদ্রা কাটাতে কলার ব্যবহার
পায়ের যত্নে কলার ব্যবহার
চুলের যত্নে কলা
কাঁচা কলার উপকারিতা
এসিডিটির সমস্যায় ভুগলে কলার থোড় ব্লেন্ড করে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। নিয়মিত থোড়ের রসে এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারলে গলব্লাডার পরিষ্কার থাকে। শিশুর ইউরিনের কোনো সমস্যা থাকলে থোড়ের রসে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ান।কলার খোসার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা
https://www.medicalnewstoday.com/articles/271157
https://www.bbcgoodfood.com/howto/guide/health-benefits-bananas
https://www.everydayhealth.com/diet-nutrition/11-banana-health-benefits-you-might-not-know-about/সর্বশেষ পোস্টগুলো