রান্নায় স্বাদ বাড়াতে রসুন এক অনন্য মসলা। তীব্র সুঘ্রাণের কারণে সবজি, মাংস থেকে শুরু করে কাচ্চি, কারি রান্নায়ও রসুনের জুড়ি নেই। রসুনকে বলা হয় ‘পাওয়ার হাউস অব মেডিসিন অ্যান্ড ফ্লেভার’। নিয়মিত কাঁচা বা সিদ্ধ রসুন সেবনে শরীর সুস্থ থাকে।
রসুনের পুষ্টি উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম রসুনে ১৫০ ক্যালরি শক্তি, ৩৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ৬.৩৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়াও রসুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, ভিটামিন সি, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং জিঙ্ক রয়েছে।
খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রসুন রক্ত পরিশুদ্ধ করে। রক্তে উপস্থিত শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেও রসুন বেশ সহায়ক। সকালে খালি পেটে কয়েক কোয়া রসুন খেলে সারা রাত ধরে চলা বিপাকক্রিয়ার কাজ উন্নত হয়।
২/৩ টি রসুনের কোয়া কুচি করে সামান্য ঘি’য়ে ভেজে নিন। এটি সবজির সাথে কিংবা এমনি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। বাড়তি ওজন কমাতে খালি পেটে গরম পানিতে রসুন এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন।
এ ছাড়া নিয়মিত রসুন খাওয়ার ফলে শরীরের দূষিত টক্সিনও মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। শীতকালে প্রতিদিন খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা অনেকটা কমে। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মতো কাজ করে।
রসুন হজম ও ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। স্ট্রেস বা চাপের কারণে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায় পড়তে হয়। খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে আমাদের স্নায়বিক চাপও কমে যায়।
রসুনের নানাবিধ ঔষধি গুণাগুণ
রসুন কেবল রান্নায় সুগন্ধ ও স্বাদ বৃদ্ধি করে না পাশপাশি এর ঔষধি গুণ নানা রকমের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
চলুন দেখে নিই, কি কি কারণে রসুন আমাদের কাছে এতো সমাদৃত-
রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হৃদ রোগের অন্যতম কারণ। এর ফলে রক্তনালী, চোখ, হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দৈনিক চার কোয়া করে রসুন খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া রসুনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা স্কার্ভি রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এবং রক্তনালী নমনীয় করে।
শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক রাখে
রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। উপকারি কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতেও এটি সহায়ক। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
অ্যাজমা, কফ, নিউমোনিয়া প্রতিরোধে
রসুন কফের উপশমে ভারি উপকারি ঔষধ। সামান্য তেলে ১/২ কোয়া রসুন ভেজে তা ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে খান, বুকে কফ জমা থেকে মুক্তি মিলবে ইনশা’আল্লাহ।
অ্যাজমা ও নিউমোনিয়ার সমস্যা নিরাময়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধে রসুন মিশিয়ে খান। রসুন যক্ষা, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন, হাঁপানি, হুপিং কাশি ইত্যাদিও প্রতিরোধ করে।
জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে
নিয়মিত রসুন খাওয়ার ফলে অ্যালঝাইমার ও ডিমেনসিয়ার প্রকোপ কমে যায়৷ রসুনের ২-৩টি কোয়া কুচিয়ে নিয়ে এক টেবিলচামচ মধু মিশিয়ে নিয়মিত খান। এতে আপনার শরীর ফিট থাকবে এবং এনার্জিতে কোন কমতি হবে না।
অনিদ্রার সমস্যা দূর করে
এক গ্লাস রসুন-দুধ খেয়ে নিন, অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
রসুন-দুধ পানীয় যেভাবে প্রস্তুত করবেন:
উপকরণ: আধা লিটার দুধ, খোসা ছাড়ানো ১০ কোয়া থেঁতলানো রসুন, সামান্য চিনি এবং ১/২ লিটার পানি।
একটি পাত্রে দুধ ও পানি মেশান। এরপর থেঁতলানো রসুন যোগ করে চুলোয় ভালো করে ফুটিয়ে নিন। সাথে প্রয়োজনমতো চিনি মিশিয়ে নিন। তাৎক্ষণিক ফলাফল পেতে এটি উষ্ণ থাকতে থাকতেই পান করুন।
শরীরকে ডিটক্সিফাই করে
রসুনে বিদ্যমান সালফার ‘অরগ্যান ড্যামেজ’ থেকে আমাদের রক্ষা করে। পেটের কৃমি নিরাময়েও রসুন ভারি উপকারি। রসুন প্যারাসাইট, জ্বর, বিষন্নতা এবং ডায়াবেটিসও প্রতিরোধ করে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক পাতিলেবুর রস আর দু’কোয়া রসুন কুচি মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে এসব ক্ষতিকর উপাদান সহজে বেরিয়ে যাবে।
হাড় মজবুত করে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকের হাড়ে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। রোজ ২ গ্রাম করে রসুন খাওয়ার ফলে শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বাড়ে। যেসব মহিলাদের মেনোপোজ হয়ে গেছে (এ সময় স্বাভাবিকভাবে মহিলাদের হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে), তারাও নিয়মিত রসুন খেলে উপকার পাবেন।
স্কিন ইনফেকশন সারিয়ে তোলে
রসুনে বিদ্যমান অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি সেল ড্যামেজ এবং ‘এজিং‘ প্রতিরোধ করে। রিঙ্কেল, ফাইন লাইনস, এজ স্পট, ডার্ক স্পট থেকেও স্কিনকে দূরে রাখে রসুন। রসুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম: ১ কোয়া কাঁচা রসুন, মধু ও লেবুর সংযোগে চিবিয়ে খান, সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস আর প্যারাসাইটের মোকাবিলায় অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে রসুন দারুণ ফলদায়ক। রসুন ইস্ট ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত রসুন সেবনে শরীরে সব ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। রসুনের নির্যাস থেকে ‘মাউথ ওয়াশ’ প্রস্তুত করা হয়। নিয়মিত এ ‘মাউথ ওয়াশ’ ব্যবহারে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার বন্ধ হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবেন।
ব্ল্যাকহেডস দূর করতে
সাধারণত আমাদের ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমে ব্ল্যাকহেডস তৈরি হয়। ব্ল্যাকহেডস কমাতেও রসুন বেশ সহায়ক।
ব্যবহার:
খানিকটা রসুন ও টমেটো ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন। গোসলের আগে এ পেস্ট মুখে মেখে ১৫ মিনিটের মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ দিন করুন। ব্ল্যাকহেডস দূর করার পাশাপাশি ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এটি খুব কার্যকর।
চুলের যত্নে রসুন
অল্প বয়সেই চুল পেকে যাচ্ছে?
রসুনে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ অকালপক্কতা কমাতে দারুণ উপকারি। নারকেল তেলের মধ্যে কয়েক কোয়া রসুন ও একটু গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এরপর কম আঁচে ফুটিয়ে নিন। তেল ঠান্ডা হলে এটা ভেজা চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর চুল ধুয়ে নিন। চুল থাকবে কালো ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
রসুন চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ করে। কয়েকটা রসুনের কোয়া কেটে নিয়ে স্ক্যাল্পে ঘষুন। এ ছাড়া খানিকটা রসুন অলিভ অয়েলে মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়েও স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে পারেন।
যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে রসুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতি মিলিলিটার শুক্রাণুতে ২০ মিলিয়নের কম স্পার্ম থাকলে যেকোনো পুরুষ অনুর্বর হতে পারেন। বাজে খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, অ্যালকোহল, অনিয়ন্ত্রিত জীবন, ব্যায়ামে অনীহা প্রভৃতি কারণে দিন দিন পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমছে।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে দৈনন্দিন পুষ্টিকর খাবার-দাবার’ই যথেষ্ট। প্রতিদিনের খাবার মেন্যুতে দুধ, ডিম, মধু, কাঁচা রসুন রাখুন আর নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করুন, তাহলে যৌন দুর্বলতায় ভুগবেন না।
মূলত Semen (বীর্য) তৈরিতে রসুনের জুড়ি মেলা ভার। রসুনে এলিসিন নামে রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা যৌন ইন্দ্রিয়গুলোতে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। কোন রোগের কারণে বা দুর্ঘটনায় আপনার যৌন ইচ্ছা কমে গেলে এটি আপনাকে যৌনশক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
২ চামচ কাঁচা আমলকির রসে খানিকটা রসুন বাটা মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করুন। এতে স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হবে।
অথবা, প্রতিদিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি গাওয়া ঘি-এ ভেজে মাখন মিশিয়ে খান। সাথে গরম পানি বা দুধ খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
এছাড়া কোনো ব্যক্তির যৌন ইচ্ছা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে (যা নার্ভাস সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে), তা স্বাভাবিক করে তুলতেও রসুন বেশ কার্যকর।
প্লাক জমাতে বাধা প্রদান করে
রসুন শিরা-উপশিরায় প্লাক জমাতে বাধা প্রদান করে। এটি অথেরোস্ক্লেরোসিসের মত মারাত্মক রোগের হাত থেকেও রক্ষা করে। শিরা-উপশিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে রসুন দারুণ সহায়ক।
গিত ব্যথার সমাধানে
রসুন গিট বাতের প্রদাহ উপশম করে। নিয়মিত ২ কোয়া করে রসুন খেলে গিটের বাত সেরে যাবে। রসুন-দুধ খেলেও ভালো ফল পাওয়া যাবে।
শরীরের ফোড়া সারাতে
রসুন যেকোনো পুঁজ ও ব্যথাযুক্ত ফোড়া সারাতে দারুণ কার্যকর। সংক্রমিত স্থানে খানিকক্ষণ রসুনের রস লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে তাড়াতাড়ি ধুয়ে ফেলুন। দাদ,খোস পাঁচড়া ইত্যাদি বিভিন্ন চর্মরোগের অত্যন্ত ফলদায়ক প্রতিষেধক রসুন।
কাটা সারিয়ে তুলতে
অসাবধানতাবশত শরীরের কোথাও কাঠ বা বাঁশের ছোট টুকরো ঢুকে গেলে তা বের করে সেখানে রসুনের কোয়া কেটে লাগিয়ে দিন। একই সাথে শরীরের ওই অংশে ব্যান্ডেজ করে দিতে হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ কাটা সেরে উঠবে।
কর্পূরের সঙ্গে পোড়া রসুন মেশালে মশা, মাছি, পোকামাকড়ের হাত রেহাই পাওয়া যায়। রসুনকে পিষে পানিতে মিশিয়ে ঘর মুছলেও পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
রসুনের আচার
রসুনের আচার শুধু স্বাদের জন্য নয়, স্বাস্থ্যের পক্ষেও বেশ উপকারি।
চলুন তৈরি করে নিই, মুখরোচক রসুনের আচার-
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
২ কাপ রসুনের কোয়া
১/৪ কাপ তেঁতুল গোলা
আধা ভাঙা ২ চা-চামচ পাঁচফোড়ন
২ চা-চামচ আদা-বাটা
২ টেবিল-চামচ শুকনো মরিচের গুঁড়ো
১/৪ কাপ পেঁয়াজ বেরেস্তা
২ টেবিল-চামচ সরিষা
২ টেবিল-চামচ গুড়
তেজপাতা
লবণ ও কাঁচামরিচ
১/২ কাপ করে সয়াবিন ও সরিষার তেল
দু’তিন টেবিল-চামচ ভিনেগার
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে সরিষা ও আদাবাটায় খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে একটি পাত্রে রেখে দিন। এরপর চুলায় কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে সরিষার তেল ঢালুন।
প্যানে তেল গরম হলে অর্ধেক পাঁচফোড়ন ও তেজপাতা দিন। তেল ফুটে উঠলে আদা ও সরিষা পেস্ট, সিরকা, টালা শুকনা-মরিচের গুঁড়ো তেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন।
এরপর ভালোভাবে পেস্টটি মিশে গেলে রসুনগুলো ঢেলে আঁচ বাড়িয়ে নাড়তে থাকুন। তেল ও মসলা ফুটে এলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
খানিকক্ষণ পর রসুন সিদ্ধ হয়ে এলে আঁচ কমিয়ে দিন এবং পেঁয়াজ বেরেস্তা ও পরিমাণমতো গুড় ও লবণ দিন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে যেন লেগে না যায়।
এবার বাকি অর্ধেক পাঁচফোড়ন দিয়ে দিন। ঝোল শুকিয়ে এলে তেল ছাড়ার দুই মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।
আচার ঠাণ্ডা হলে শুকনো কাঁচের বৈয়ামে ভরে রেখে দিন। ঠান্ডা জায়গায় আচার রাখলে অনেক দিন ভালো থাকবে। ফ্রিজে রেখে এ আচার সংরক্ষণ করতে পারেন। আচার তোলার সময় শুকনা চামচ ব্যবহার করবেন। সতর্ক থাকুন যাতে আচারে পানি ঢুকে ফাঙ্গাস পড়ে না যায়।
আপনি চাইলে শুধু সিরকায় শুকনো মরিচ, লবণ দিয়ে কাশ্মীরি আচারের মতো করে রসুন কোয়া জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে বৈয়ামে রাখতে পারেন।
আচারের স্বাস্থ্যগুণ
রসুনের আচার আমাদের শরীরের জন্য ন্যাচারাল অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। সর্দি, কাশি, হৃদরোগ, কোলেস্টেরল ইত্যাদি সমস্যার দ্রুত প্রতিকারে রসুনের আচারে মধু মিশিয়ে খান। যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন তাদের জন্যও রসুনের আচার ভালো প্রতিষেধক।
অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে/ সতর্কতা
শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন রোগীদের রসুন না খাওয়াই ভালো। কাঁচা রসুন খাওয়া মাথা ব্যথা, বমি ইত্যাদির অন্যতম কারণ। এমনকি অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে।
যেকোনো অপারেশনের কয়েকদিন আগে থেকে রসুন খাওয়া বন্ধ করে দেয়া উচিৎ। যাদের শরীর থেকে রক্তপাত সহজে বন্ধ হয় না, অতিরিক্ত রসুন খাওয়া তাদের জন্য বিপদজনক।
যারা ‘ওয়ারফারিন’ ‘অ্যাসপিরিন’ ইত্যাদি ‘ব্লাড থিনার’ ধরনের ওষুধ সেবন করেন, তারা অতিরিক্ত রসুন খাওয়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এতে রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গর্ভবতী নারীদের রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এতে ‘লেইবার পেইন’ বা প্রসব বেদনা বেড়ে যেতে পারে। শিশুকে দুগ্ধদানকারী মায়েদেরও রসুন খাওয়া পরিহার করা দরকার। রসুন খাওয়ার ফলে তা মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর পাকস্থলীতে ঢুকে শিশুর পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
যকৃত শরীরের রক্ত পরিশোধন, চর্বি ও প্রোটিন বিপাক, শরীর থেকে অ্যামোনিয়া অপসারণ ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে এতে বিদ্যমান ‘অ্যালিসিন’ যকৃতে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
নারীর জননাঙ্গে ‘ইস্ট’ জনিত প্রদাহের চিকিৎসা চলাকালীন রসুন থেকে দূরে থাকা উচিৎ।
অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার কারণে ‘হাইফিমা’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ‘আইরিস’ ও ‘কর্নিয়া’র মাঝে রক্তক্ষরণ ঘটতে পারে। ফলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।
সুস্থ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ব্যায়াম খুব জরুরি। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীরে হরমোনের প্রবাহ বাড়ে। এজন্য নিজের কাজ, মিটিং বা অন্যান্য প্রয়োজনের মাঝেও ব্যায়ামের জন্য প্রতিদিন কিছু সময় বের করুন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে রোজকার কাজকর্মের একটা ছক কষে নিন। নতুন আশা, নতুন আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে থাকে প্রতিটি প্রভাতে-ই!
Source:
https://www.healthline.com/nutrition/11-proven-health-benefits-of-garlic
https://food.ndtv.com/food-drinks/powerhouse-of-medicine-and-flavour-surprising-health-benefits-of-garlic-1200468?amp=1&akamai-rum=off
http://www.bbc.co.uk/sn/humanbody/truthaboutfood/healthy/erectiledysfunction.shtml
https://www.medicalnewstoday.com/articles/265853