টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও ঔষধ | টাইফয়েড হলে করনীয়

টাইফয়েড আমাদের অতি পরিচিত একটি রোগ। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে শীত শেষ হওয়ার পর গরম পড়তে শুরু করলে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যায়। টাইফয়েড এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ।

মূলত সালমোনালা টাইফিমিউরিয়াম বা এস. টাইফি ও প্যারা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে এই রোগ হয়। মানুষ ব্যতীত অন্য কোনো প্রাণী এই রোগ বহন করে না। তাই টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তিকে যথাসময়ে চিকিৎসা প্রদান না করলে তার আশেপাশের অন্যদের মধ্যে এই রোগ খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।

টাইফয়েড কেন হয়

টাইফয়েড রোগ মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। টাইফি ব্যাকটেরিয়া যুক্ত পানি ও খাবার খাওয়ার ফলে টাইফয়েড জ্বর হয়৷ এই ব্যাকটেরিয়া মূলত বাসা-বাড়িতে সরবরাহ করা পানি ও সিউয়েজ লাইন থেকে ছড়ায়। এছাড়া টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর মলমূত্র থেকেও টাইফি ব্যাকটেরিয়া পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।

একবার দূষিত পানি ও খাবারে সাথে টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া মানুষের দেহে প্রবেশের পর তা কয়েক সপ্তাহ অন্ত্রের মধ্যে থাকে। সেখানে এই ব্যাকটেরিয়া পুরোপুরি শক্তিশালী হওয়ার পর তা অন্ত্রের গাত্র ও রক্তনালির মধ্য দিয়ে দেহের অন্যান্য কোষ ও অঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে। টাইফি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের দেহের ইমুউন সিস্টেম খুব বেশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না। ফলে খুব সহজেই এই ব্যাকটেরিয়া মানুষকে কাবু করে ফেলে।

টাইফয়েডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৩-৫% ব্যক্তি এই ব্যাকটেরিয়া বহনকারী হিসেবে কাজ করে থাকে। বাকিদের অনেকে সামান্য মাত্রা আক্রান্ত হয়৷ কেউ কেউ আবার টাইফি ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হলেও তাদের মধ্যে রোগের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু এদের শরীরে দীর্ঘদিন এই ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। পরবর্তী সময়ে এদের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ৬ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সমূহ প্রকাশ হতে শুরু করে। টাইফয়েডের প্রধান দুটি লক্ষণ হলো জ্বর ও শরীরে লালচে ফুসকুড়ি। টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরের মাত্রা সাধারণ জ্বরের চেয়ে অনেক বেশি হয়। জ্বর ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যায়৷ জ্বরের পাশাপাশি ঘাড় ও তলপেটে লালচে রঙের ফুসকুড়ি উঠে থাকে৷ তবে টাইফয়েডে আক্রান্ত সকলেরই ফুসকুড়ি উঠে না।

এর বাইরে টাইফয়েড আক্রান্ত ব্যক্তির প্রচণ্ড মাথাব্যথা, গলাব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও শরীর দুর্বল হয়। অনেক টাইফয়েড রোগীর ডায়রিয়া ও বমি হয়। টাইফয়েড যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে অন্ত্রে ছিদ্রের সৃষ্টি হয়। যা থেকে অন্ত্রের ঝিল্লিতে প্রচণ্ড প্রদাহ হয়। তবে এই ঘটনা খুবই কম সংখ্যক রোগীর সাথে হয়ে থাকে। আরেক ধরনের টাইফয়েড রয়েছে যাকে বলা হয় প্যারা টাইফয়েড। এই রোগের লক্ষণসমূহ টাইফয়েড রোগের মতোই। কিন্তু এটা টাইফয়েডের চেয়ে কিছুটা দুর্বল।

টাইফয়েড টেস্ট

সাধারণত রক্ত, মল ও মূত্রের পরীক্ষার মাধ্যমে টাইফয়েড নির্ণয় করা হয়। রোগীর এসব নমুনা মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে পরীক্ষা করে সালমোনেলা টাইফি ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা তা যাচাই করা হয়।  অনেক সময় প্রথমবারের পরীক্ষায় টাইফয়েড ধরা পড়ে না। এ কারণে বেশ কয়েকবার একই ধরনের পরীক্ষা করে টাইফয়েড হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা হয়।

তবে বোন ম্যারো পরীক্ষার মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে টাইফয়েড নির্ণয় করা যায়। কিন্তু পরীক্ষা ও নমুনা গ্রহণ, উভয়ই বেশ জটিল ও কষ্টকর। তাই অন্য পরীক্ষায় যদি কোনোভাবে টাইফয়েড ধরা না পড়ে তবেই বোন ম্যারো টেস্ট করা হয়। যদি পরিবারের একজনের টাইফয়েড ধরা পড়ে তাহলে অন্য সদস্যদেরও টাইফয়েড পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কেননা টাইফয়েডে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে অন্যরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

টাইফয়েড হলে করণীয়

রক্ত পরীক্ষা: টাইফয়েড পানিবাহিত জীবাণুর মাধ্যমে ছড়ায়। তাই টাইফয়েডের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে সবার আগে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। রক্ত পরীক্ষা থেকে নিশ্চিত হতে হবে টাইফয়েড হয়েছে কিনা।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে: টাইফয়েড হওয়ার অন্যতম কারণ নোংরা পরিবেশ। তাই টাইফয়েড রোগ থেকে দূরে থাকতে হলে এবং টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করতে হবে। নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ফলমূল ধুঁয়ে খেতে হবে। ঘরের সকল জিনিসপত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা করে রাখতে হবে।

পানি ও খাবারে সতর্কতা: টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। ঠাণ্ডা কোনো খাবার খাওয়া যাবে না৷ প্রয়োজনে গরম করে খেতে হবে। অপরিষ্কার শাক-সবজি ও ফলমূল খাওয়া যাবে না।

বাসস্থান ও টয়লেটের ব্যবস্থা: সবসময় বাসস্থান ও টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। টয়লেট অথবা ঘরে যেন নোংরা পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির টয়লেট ও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিতে খোলামেলা পরিবেশে রাখতে হবে।

টাইফয়েড হলে যেসব খাবার খাবেন

চিকিৎসকদের মতে টাইফয়েডের যেকোনো রোগীর উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। কেননা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার টাইফয়েডের কারণে ওজন হ্রাস হওয়া প্রতিরোধ করে। এ কারণে এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে পাস্তা, সেদ্ধ আলু, সাদা রুটি ও কলা খেতে দিতে হবে।

টাইফয়েডের রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ টাইফয়েডের কারণে অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে। যার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। শরীরে পানির পরিমাণ কমে টাইফয়েডের চিকিৎসাতেও সমস্যা হয়। তাই টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি, প্রচুর পানিযুক্ত ফল ও অন্যান্য খাবার এবং ফলের রস খাওয়াতে হবে।

অধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার দিতে হবে। হালকা শক্ত ও হালকা নরম জাতীয় খাবার সহজেই পরিপাক হয়। এ জন্য টাইফয়েডের রোগীদের ভাত, ভাজা আলু ও ডিম পোচ খেতে দিতে হবে। এই খাবারগুলো টাইফয়েডেে রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

টাইফয়েডে আক্রান্তদের প্রচুর পরিমাণে দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি তাদের খাঁটি মধু খাওয়ালে দ্রুত রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করবেন।

টাইফয়েড রোগীর ডায়েটে অবশ্যই দই ও ডিম রাখতে হবে। এগুলো খুব তাড়াতাড়ি পরিপাক হয়। যা টাইফয়েড রোগীদের দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি দেহের প্রোটিনের অভাব পূরণ করে। তবে যারা নিরামিষভোজী তারা দই ও ডিমের পরিবর্তে মসুরের ডাল, মাষকলাই ও কটেজ চিজ খেতে পারেন।

যেসব খাবার খাওয়া যাবে না

টাইফয়েড রোগীদের প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এ ধরনের খাবার হজম হতে অনেক সময় লাগে।

ক্যাপসিকাম ও বাঁধাকপির মতো গ্যাস সৃষ্টিকারী সবজি পরিহার করতে হবে। এই খাবারগুলো পেটে গ্যাস তৈরি করে এবং পেট ফেঁপে যায়।

রসুন ও পেঁয়াজ বেশি খাওয়া যাবে না। এমন ফ্লেভারযুক্ত অন্য কোনো সবজিও খাওয়া যাবে না।

মসলাদার ও এসিটিক এসিড সৃষ্টিকারী খাবার খাওয়া খাবে না। যেমন: হট সস, কাঁচামরিচ ও ভিনেগার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

ঘি, মাখন, ডেজার্ট ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করতে হবে।

টাইফয়েডের চিকিৎসা

টাইফয়েড সাধারণত ৩-৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়৷ তবে ক্ষেত্র বিশেষে আরো দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। টাইফয়েডের চিকিৎসা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো সাধারণত টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। সচরাচর এই রোগের চিকিৎসায় সিপ্রোফ্লোক্সাসিন (সিপ্রো), অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও সেফট্রিয়াক্সোন।

যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত গর্ভবতী ব্যতীত অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসকরা সিপ্রোফ্লোক্সাসিন দিয়ে থাকেন। আমাদের দেশেও টাইফয়েডের রোগীদের এই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না। বাদ নেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও। যে সকল রোগী সিপ্রোফ্লক্সাসিন নিতে পারেন না কিংবা এই অ্যান্টিবায়োটিক যাদের শরীরে কোনো কাজ করে না তাদের টাইফয়েড চিকিৎসায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেওয়া হয়।

আর যাদের টাইফয়েডের মাত্রা অনেক বেশি এবং বাচ্চাদের সিপ্রোফ্লক্সাসিনের পরিবর্তে সেফট্রিয়াক্সোন অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশনের মাধ্যম্যে শরীরে দেওয়া হয়। তবে এসব অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। দীর্ঘদিন এসব ঔষুধ ব্যবহার করলে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্ট তৈরি হতে পারে। আর টাইফয়েডের ফলে যদি কারো অন্ত্রে ছিদ্র হয় তাহলে তাকে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে।

টাইফয়েডের ভ্যাকসিন

টাইফয়েড প্রতিরোধ করার জন্য মূলত দুই ধরনের ভ্যাকসিন রয়েছে। এক. ভিআই অ্যান্টিজেন বা ভিআই-পিএস (Vi-PS) ভ্যাকসিন। অপরটি হলো টিওয়াই-২১ ভ্যাকসিন। ভিআই ভ্যাকসিন সাধারণত ইনজেকশনের মাধ্যমে একবার দেওয়া হয়। যা প্রায় ৩ বছর পর্যন্ত ৭০ ভাগ টাইফয়েড প্রতিরোধ করে। অপরদিকে টিওয়াই-২১ ভ্যাকসিন ক্যাপসুল আকারে খেতে হয়। ভিন্ন ভিন্ন দিনে মোট তিনটি ক্যাপসুল খেতে হয়। এই ভ্যাকসিন দীর্ঘদিন টাইফয়েডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম।

Source:

1. https://doctor.ndtv.com/living-healthy/typhoid-diet-foods-to-eat-and-avoid-during-typhoid-1879975?amp=1#aoh=15741785461923&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s
2. https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/typhoid-fever/diagnosis-treatment/drc-20378665
3. https://www.who.int/immunization/research/development/typhoid/en/
4. https://www.nhs.uk/conditions/typhoid-fever/vaccination/
5. https://www.webmd.com/a-to-z-guides/typhoid-fever
6. https://www.medicalnewstoday.com/articles/156859.php

আপনার পছন্দের লেখাগুলো নিয়মিত পেতে ইমেইল দিয়ে এখনি সাবস্ক্রাইব করুন।
সর্বশেষ পোস্টগুলো
আমার ওজন কমানোর গল্প

আমার ৩৪ কেজি ওজন কামানোর কথা

home remedies for insomnia

অনিদ্রা দূর করার উপায় । ১০ টি ঘরোয়া ঔষধ

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা বা ডায়েট চার্ট

অতিরিক্ত ওজন কমানোর ঔষধ

ওজন কমানোর প্রাকৃতিক ঔষধ

ওজন বাড়ানোর খাবার তালিকা

কফ কাশির প্রাকৃতিক ঔষধ

কফ বা কাশির প্রাকৃতিক চিকিৎসা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

গরম পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা

খুশকি দূর করার উপায়

ঘরে বসে খুশকি দূর করার সহজ ১০টি উপায় । খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক শ্যাম্পু

চুল পরা বন্ধের উপায়

চুল পড়া বন্ধের প্রাকৃতিক ঔষধ 

দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়

দ্রুত ওজন বারানোর উপায়

বমি দূর করার উপায়

বমি দূর করার উপায় | বমি হলে করনীয়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর ৯ টি সহজ উপায়

দ্রুত ওজন কমানোর খাবার তালিকা

মাসে ১০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট




Categories

হরেক রকম বাদামের হরেক রকমের উপকারিতা | বাদাম খাওয়ার নিয়ম

বাদাম খেলে কি হয় | বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

বন্ধুদের আড্ডায় বাদাম এক অতি পরিচিত খাবার। বছরের পুরো সময়ই ছোট থেকে বড়, সব দোকানেই বাদাম কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত আমরা যে বাদাম খেয়ে থাকি তার নাম চীনা বাদাম। কিন্তু এই বাদাম ছাড়া আরো অনেক রকমের বাদাম রয়েছে। প্রত্যেক বাদামেরই রয়েছে আলাদা আলাদা পুষ্টিগুণ এবং ব্যবহার।

বাদামের প্রকারভেদ

সারাবিশ্বে অসংখ্য রকমের বাদাম রয়েছে। আবহাওয়া ও জলবায়ুর তারতম্যের কারণে একেক অঞ্চলে একেক রকমের বাদাম উৎপন্ন হয়। তবে সারাবিশ্বে মোটামুটি ১০-১২ রকমের বাদাম রয়েছে যেগুলো প্রায় সকলের কাছেই পরিচিত।

সহজলভ্যতা ও বহুল ব্যবহারের দিক থেকে যেসব বাদাম আমাদের কাছে অধিক পরিচিত সেগুলো হলো কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, ব্রাজিলিয়ান বাদাম, চেস্ট নাট ( এক ধরনের গোলাকার বাদাম), হ্যাজেল নাট, ম্যাকাডেমিয়া বাদাম, পিক্যান বাদাম, পিলি বাদাম, পাইন বাদাম ও আখরোট।

বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

বাদামে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট থাকে। কিন্তু এই ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং উপকারী। এছাড়া বাদাম ফাইবার ও প্রোটিনের ভালো উৎস। বিভিন্ন গবেষণা থেকে বাদামের নানাবিধ উপকারের কথা জানা গেছে। বিশেষ করে বাদাম খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া বাদামের আরো যেসকল উপকারিতা রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পুষ্টি উপাদানের বড় উৎস: বাদামে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে যার প্রত্যেকটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ৩০ গ্রাম বিভিন্ন ধরনের বাদাম থেকে ১৭৩ ক্যালরি পাওয়া যায়। এছাড়া প্রোটিন ৫ গ্রাম, ফ্যাট ১৬ গ্রাম, ফাইবার ৩ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৬ গ্রাম পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি বাদামে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও সেলেনিয়াম থাকে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর: বাদামকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউস বা শক্তিঘর বলা হয়। বিশেষ করে আখরোট ও কাঠবাদামে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির ঝুঁকি কমায়।

বাদাম ওজন কমাতে সহায়ক: বাদামকে উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন খাবার মনে করা হয়। কিন্তু বাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বাড়ে না। বরং তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়েটে অলিভ অয়েলের চেয়ে বাদাম খেলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। ওজন কমানোর জন্য কাঠবাদাম খুবই উপকারী। কাজুবাদামেরও একই গুণ রয়েছে।

যে সকল নারী অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ডায়েটে বাদাম রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কারণ ডায়েটে বাদাম রাখলে অন্য নারীদের চেয়ে তিনগুণ দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। অনেকে অতিরিক্ত ফ্যাট থাকার কারণে বাদাম খেতে চান না। তাদের জন্য আশার বাণী হলো আমাদের শরীর বাদামে থাকা ফ্যাট পুরোপুরি শোষণ করে না। যার ফলে বাদামে অতিরিক্ত ফ্যাট থাকলেও বাদাম খেয়ে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

বাদাম কোলেস্টেরল ও টাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়: অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ও টাইগ্লিসারাইডের ফলে শরীর মুটিয়ে যায় এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যদি নিয়মিত বাদাম খাওয়া হয় তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি করা সম্ভব। বিশেষ করে পেস্তাবাদাম টাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। প্রায় ১২ সপ্তাহের এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত পেস্তাবাদাম খান, তাদের শরীরে টাইগ্লিসারাইড প্রায় ৩৩% কম। আর কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণ করে বাদামের ফ্যাটি এসিড।

কাঠবাদাম ও হ্যাজেল নাট খাওয়ার ফলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর নিম্ন ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) কমিয়ে উপকারী উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিনের মাত্রা বাড়ে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আখরোট, চিনাবাদাম, পাইন বাদাম ও ম্যাকাডেমিয়া নাটও খুবই উপকারী। এই বাদামগুলো যেভাবে খুশি খেতে পারেন।

প্রদাহ কমাতে সহায়ক: বাদামের মধ্যে প্রদাহ বিরোধী উপাদান রয়েছেন। কোনো চোট, ব্যাকটেরিয়া কিংবা অন্য কোনো কারণে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হলে বাদাম খাওয়া উত্তম। নিয়মিত বাদাম খেলে ক্ষণস্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। বিশেষ করে যারা কিডনি ও ডায়াবেটিসের সমস্যা ভুগছেন। এর জন্য খেতে হবে আখরোট, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম ও ব্রাজিলিয়ান বাদাম।

ফাইবারের ভালো উৎস: ফাইবার আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন খাবারে ফাইবারের অভাব হয় তখন আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার ঘটে। ফাইবার খাবার হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি খাবারের ক্যালরির মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে পারে না। কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, চিনাবাদাম, পিক্যান, হ্যাজেলনাট, ম্যাকাডেমিয়া বাদাম ও ব্রাজিলিয়ান বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।

বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: হৃদযন্ত্রের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, বাদাম খেলে হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়৷ যার ফলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। একই সাথে স্ট্রোক করার ঝুঁকি হ্রাস পায়।

কাজুবাদামের উপকারিতা

নিয়মিত কাজুবাদাম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকে।

কাজুবাদামে উচ্চমাত্রায় কপার থাকে। যা রক্তের দূষিত কণিকা দূর করে রক্তে লৌহের মাত্র বাড়ায়। ফলে রক্তের বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।

কাজুবাদামে জিয়া জ্যানথিন নামে এক ধরনের শক্তিশালী পিগমেন্ট থাকে, যা আমাদের চোখকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে।

কাজুবাদামে উচ্চমাত্রায় সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস থাকে। সেলেনিয়াম আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া সেলেনিয়াম ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও কাজ করে।

কাজুবাদাম ওজন কমাতে সহায়তা করে। এই বাদাম ফাইবারের বড় এক উৎস। নিয়মিত কাজুবাদাম খেলে চুল উজ্জ্বল ও ঘন হয়।

কাজুবাদামের অপকারিতা

অনেক গুনাগুনের পাশাপাশি কাজুবাদামের বিভিন্ন ধরনের অপকারিতাও রয়েছে। অতিরিক্ত কাজুবাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যায়৷ এছাড়া কাজুবাদামে উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম থাকার ফলে অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা মন্থর করে দেয়। যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের কাজুবাদাম খেলে সমস্যা হতে পারে। এছাড়া কাঁচা কাজুবাদামের মধ্যে থেকে এক ধরনের বিষাক্ত তরল বের হয় যা শরীরে লাগলে ঘা হয়ে যায়৷ এ কারণে বাজারে খোলযুক্ত কাঁচা কাজুবাদাম পাওয়া যায় না।

কাঠবাদামের উপকারিতা

কাঠবাদাম হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কাঠবাদাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কাঠবাদামে থাকা ভিটামিন -ই ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের ত্বক সুস্থ রাখে।

কাঠবাদাম ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে।

কাঠবাদাম ওজন বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস প্রতিরোধ করে।

কাঠবাদাম খাওয়ার পরে শরীরে পুষ্টি উপাদান শোষণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

কাঠবাদাম পাকস্থলির পরিপাক ক্রিয়া ঠিক রাখতে সহায়তা করে।

এই বাদাম শরীরের প্রদাহ কমায় এবং ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

কাঠবাদামের অপকারিতা

অতিরিক্ত কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা হয়।

১০০ গ্রাম কাঠবাদামে ২৫ গ্রাম ভিটামিন-ই থাকে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ দিনে সর্বোচ্চ ১৫ গ্রাম ভিটামিন-ই গ্রহণ করতে পারেন। অতিরিক্ত ভিটামিন-ই গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া, শরীর দুর্বল ও চোখের জ্যোতি কমে যেতে পারে।

অতিরিক্ত কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।

অতিরিক্ত কাঠবাদাম খেলে শরীরে রক্তচাপের ঔষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করতে পারে না।

গর্ভবর্তী মহিলাদের অতিরিক্ত কাঠবাদাম খেলে বাচ্চার সমস্যা হতে পারে।

চিনাবাদামের উপকারিতা

বায়োটিনের বড় উৎস চিনাবাদাম। বায়োটিনকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের সাথে তুলনা করা হয়। বায়োটিন স্কোরোসিস, ডায়াবেটিস ও মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

চিনাবাদামে শতকরা ৮০ ভাগ অসম্পৃক্ত ফ্যাট থাকে যা হৃদযন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত চিনাবাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।

চিনাবাদামে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

চিনাবাদাম পিত্তথলিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে।

চিনাবাদাম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

চিনাবাদামের অপকারিতা

অতিরিক্ত চিনাবাদাম খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়।

চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে, যা শরীরে অন্যান্য জলীয় উপাদান শোষণে বাধা প্রদান করে।

চিনাবাদামে এলার্জির সমস্যা হতে পারে।

চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।

পেস্তাবাদামের উপকারিতা

পেস্তাবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে।

অন্যান্য বাদামের তুলনায় পেস্তাবাদামে ক্যালরি কম থাকে। কিন্তু অ্যামিনো এসিড থাকে সর্বোচ্চ পরিমাণে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পেস্তাবাদাম ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পেস্তাবাদাম খাওয়ার ফলে রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রা কমে যায়৷ ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

পেস্তাবাদাম রক্তে চিনির মাত্রা কমায়।

পেস্তাবাদামের অপকারিতা

অতিরিক্ত পেস্তাবাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।

অতিরিক্ত পেস্তাবাদাম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।

যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের পেস্তাবাদাম পরিহার করা উচিত। এছাড়া অতিরিক্ত পেস্তাবাদাম কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করে থাকে।

পেস্তাবাদাম এলার্জির সমস্যা তৈরি করে। এছাড়া অতিরিক্ত ফাইবার থাকায় হজমেও সমস্যা তৈরি করে।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা

কাঁচা বাদাম খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। বাদাম ভাজলে আগুনের তাপে উপকারী মনোআন্স্যাচুরেটেড এবং পলিআন্স্যাচুরেটেড ফ্যাট নষ্ট হয়ে যায়। আর তেলে ভাজা বাদাম খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তবে ১০-১৫ মিনিট নিম্ন তাপে ভোজ্য তেল ছাড়া বাদাম ভেজে খাওয়া যেতে পারে।

কাঁচা বাদাম খাওয়ার আগে ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর ব্যক্টেরিয়া এবং ফাঙ্গাস থাকতে পারে। কাঁচা বাদাম সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ত্বকের উপকার হয় এবং অধিক পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।

Source:
1.https://www.fastnewsfeed.com/health/disadvantages-of-cashew-nuts-everyone-should-know/
2. https://food.ndtv.com/food-drinks/7-incredible-cashew-nut-benefits-from-heart-health-to-gorgeous-hair-1415221?amp=1&akamai-rum=off#aoh=15732868142020&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s
3. https://m.timesofindia.com/life-style/health-fitness/photo-stories/5-surprising-side-effects-of-eating-too-many-almonds/amp_etphotostory/60747918.cms
4. https://nuts.com/healthy-eating/benefits-of-peanuts
5. https://www.livestrong.com/article/474309-side-effects-of-eating-too-many-peanuts/
6. https://www.healthline.com/nutrition/9-benefits-of-pistachios#18

আপনার পছন্দের লেখাগুলো নিয়মিত পেতে ইমেইল দিয়ে এখনি সাবস্ক্রাইব করুন।
সর্বশেষ পোস্টগুলো
আমার ওজন কমানোর গল্প

আমার ৩৪ কেজি ওজন কামানোর কথা

home remedies for insomnia

অনিদ্রা দূর করার উপায় । ১০ টি ঘরোয়া ঔষধ

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা বা ডায়েট চার্ট

অতিরিক্ত ওজন কমানোর ঔষধ

ওজন কমানোর প্রাকৃতিক ঔষধ

ওজন বাড়ানোর খাবার তালিকা

কফ কাশির প্রাকৃতিক ঔষধ

কফ বা কাশির প্রাকৃতিক চিকিৎসা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

গরম পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা

খুশকি দূর করার উপায়

ঘরে বসে খুশকি দূর করার সহজ ১০টি উপায় । খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক শ্যাম্পু

চুল পরা বন্ধের উপায়

চুল পড়া বন্ধের প্রাকৃতিক ঔষধ 

দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়

দ্রুত ওজন বারানোর উপায়

বমি দূর করার উপায়

বমি দূর করার উপায় | বমি হলে করনীয়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর ৯ টি সহজ উপায়

দ্রুত ওজন কমানোর খাবার তালিকা

মাসে ১০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট




Categories

টনসিলের ওষুধ | টনসিল হলে কি করবেন

টনসিলের ঔষধ
টনসিল শব্দটি আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। গলায় সামান্য ব্যথা বলেই আমরা মনে করি টনসিলের সমস্যা হয়েছে। কিন্তু টনসিল আসলে কী? টনসিল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ। গলার পেছনের দিকে এবং মুখের ভেতরে মোট চারটি অংশে বিভক্ত। এই চারটি অংশের নাম হলো লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড৷ টনসিল আমাদের শরীরে ফিল্টারের মতো কাজ করে। এটি বিভিন্ন ধরনের জীবাণুকে আটকে দেয়। যেগুলো শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে ইনফেকশন তৈরি করতে পারে। এছাড়া টনসিল অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু কখনো কখনো অতিরিক্ত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে টনসিল নিজেই ইনফেকশনের শিকার হয়। যাকে বলা হয় টনসিলাইটিস। টনসিলের চারটি অংশের যেকোনো একটিতে প্রদাহ হলে তাকে টনসিলাইটিস বলে। টনসিল বলতে আমরা সাধারণভাবে যেটা বুঝি সেটাই টনসিলাইটিস। এটা সচরাচর শিশুদের হয়ে থাকে। তবে শিশু ছাড়াও অন্যান্য বয়সী মানুষেরও টনসিলাইটিস হতে পারে৷ টনসিলের চারটি অংশের মধ্যে প্যালাটাইন টনসিলে অধিক পরিমাণ প্রদাহ সৃষ্টি হয়। যার ফলে আমাদের গলাব্যথা হয়। প্যালাটাইন টলসিলের প্রদাহ আবার দুই রকমের হয়ে থাকে। একটি তীব্র বা অ্যাকিউট৷ আর দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক টনসিলাইটিস।

টনসিলের কারণ 

ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমণের কারণে টনসিলাইটিস বা টনসিলের সমস্যা হয়ে থাকে। তবে টনসিলের জন্য প্রধানত স্ট্রেপটোকক্কাস (স্ট্রেপ) ব্যাকটেরিয়া দায়ী৷ এছাড়া টনসিলের জন্য অন্যান্য যে সকল ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দায়ী:
  • অ্যাডেনো ভাইরাস
  • ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
  • এপস্টেইন-বার ভাইরাস
  • প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস
  • এনটারো ভাইরাস
  • হার্পস সিম্পলেক্স ভাইরাস

টনসিলের লক্ষণ

টনসিলাইটিসের সাধারণ লক্ষণ হলো টনসিলে জ্বালাপোড়া ও ফুলে যাওয়া৷ এছাড়াও টনসিলাইটিসের হওয়ার আগে যেসব লক্ষণ দেখা যায়:
  • গলায় প্রচণ্ড ব্যথা
  • টনসিল লাল হওয়া
  • খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে ব্যথা অনুভূত হওয়া
  • গলার মধ্যে তীব্র ব্যথাযুক্ত ফোস্কা বা ক্ষত সৃষ্টি হওয়া
  • মাথাব্যথা হওয়া
  • কানেও ব্যথা হতে পারে
  • শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
  • খাবারে অরুচি
  • মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়া
  • বমিবমি ভাব হওয়া
  • পেটে ব্যথা হওয়া
  • ঢোঁক গিলতে কষ্ট হওয়া
  • স্বরভঙ্গ
  • গলা ফুলে যাওয়া

টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রাথমিকভাবে টনসিলের সমস্যা হওয়ার পর প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। এছাড়া টনসিল নিরাময়ের জন্য ঘরোয়া বেশ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। ১. লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করা কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচি ও গড়গড়া করলে টনসিলের কারণে গলার ব্যথা প্রশমিত হয়৷ এছাড়া গলার মধ্যে যে জ্বালাপোড়া হয় সেটা কমাতে সাহায্য করে। একই সাথে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বন্ধ করতে সহায়তা করে। এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে কয়েক সেকেন্ড করে কয়েকবার কুলকচি করতে হবে। ২. যষ্টিমধু  যষ্টিমধুতে প্রদাহ কমানোর উপাদান থাকায় টনসিলের জন্য এটি খুবই উপকারী। মুখের মধ্যে সামান্য যষ্টিমধু নিয়ে চিবাতে হবে। এর মাধ্যমে একই সাথে গলা ও টনসিলের প্রদাহ উপশম হয়ে থাকে৷ যদি হাতের নাগালে যষ্টিমধু না পান, তাহলে এর উপাদান সমৃদ্ধ লজেন্স কিনতে পাবেন। এই লজেন্স খেলেও টনসিলের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়৷ তবে কেনার সময় অবশ্যই ভালো মানের লজেন্স কিনতে হবে। বাচ্চাদের টনসিলের সমস্যা হলে এই লজেন্স খেতে দেওয়া যাবে না। কেননা গলায় আটকে যেতে পারে। এর পরিবর্তে টনসিলের জন্য ‘থ্রোট (গলা) স্পে’ ব্যবহার করতে পারেন। ৩. মধু দিয়ে চা চা অথবা অন্য কোনো গরম পানীয় টনসিলের কারণে গলায় সৃষ্ট হওয়া অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে। চায়ের সাথে মধু যোগ করলে আরো বেশি উপকার পাওয়া যায়। কেননা মধুতে রয়েছে শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদান। যার ফলে ব্যাকটেরিয়ার কারণে টনসিলাইটিস সংক্রমণ হলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়। গরম চায়ের সাথে মধু মিশিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে৷ মধু যখন চায়ের সাথে মিশে যাবে তখন পানির মতো চুমুক দিয়ে খেতে হবে। এছাড়া টনসিল নিরাময়ের জন্য আদা চা ও পুদিনা পাতার চা বেশ কার্যকরী। ৪. ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার ফ্রিজে রাখা দই অথবা আইসক্রিমের মতো ঠাণ্ডা ও নরম খাবার খেলে সাময়িকভাবে টনসিলের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কেননা এই জাতীয় খাবার গলার মধ্যে ব্যথার অনুভূতিকে অসাড় করে দেয়৷ এর জন্য অনেকে আইস পপ, ঠাণ্ডা পানীয় ও ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি খেয়ে থাকেন। একই ধরনের ফল পাওয়ার জন্য চাইলে মিন্ট (পুদিনা) বা মেনথল যুক্ত চুইংগাম বা লজেন্স খেতে পারেন। ৫. পর্যাপ্ত বিশ্রাম টনসিলাইটিস হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। কেননা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগের সাথে লড়াই করতে হলে পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। এই রোগকে হালকাভাবে না নিয়ে সুস্থ মানুষের মতো স্কুল, কলেজ বা অফিসে যাওয়া উচিত নয়। কয়েকদিনের পূর্ণ বিশ্রাম না নিয়ে অন্য সময়ের মতো কাজ করলে টনসিলাইটিস বেড়ে যেতে পারে। একই সাথে আশেপাশে থাকা অন্য মানুষজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

টনসিল হলে যা খাবেন 

মধু: টনসিলের সমস্যায় মধু খু্বই কার্যকরী। বিশেষ করে টনসিলের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং রাতে ভালো ঘুমের জন্য মধু খুবই উপকারী। এছাড়া মধু কফের ঔষুধ হিসেবে কাজ করে। টনসিলে আক্রান্ত হলে চা অথবা গরম লেবু পানির সাথে মধু পান করলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। কলা: কলা পুষ্টিকর, নরম এবং সহজে গেলা যায়। টনসিলে আক্রান্ত রোগীর যেহেতু শক্ত খাবার খাওয়া নিষেধ। সেজন্য কলার সাথে আরো কিছু নরম ফলমূল মিশিয়ে খেলে টনসিলের উপর চাপ কম পড়বে। একই সাথে ক্ষুধা নিবারণ করা সম্ভব। সুপ: টনসিলের রোগীদের জন্য গরম সুপ উত্তম খাবার। সুপের মধ্যে শস্য দানার ভাত, গাজর, শিম বা অন্য কোনো সবজি কুচিকুচি করে কেটে সেদ্ধ করে সুপের সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরের পুষ্টির চাহিদা মিটবে। এছাড়া টনসিল থেকে অল্প সময়ে আরোগ্য লাভ করার জন্যও সুপ কার্যকরী। নরম পাস্তা: কলার মতো পাস্তা সহজে গেলা যায়। তাই টনসিল হলে ক্ষুধা নিবারণের জন্য ভাতের পরিবর্তে নরম পাস্তা খাওয়া ভালো। চাইলে সুপের সাথে পাস্তা মিশিয়ে খেতে পারেন। ডিম ভর্তা: ডিম সেদ্ধ করে পেঁয়াজ, মরিচ ছাড়া ছাড়া ভর্তার মতো করে আলুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। কেননা এই খাবারটি টনসিলে কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। কিন্তু শরীরে শক্তি যোগাতে ডিম ও আলু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

টনসিল হলে যা খাবেন না

টমেটো সস: টমেটো দিয়ে তৈরি টমেটো কেচাপ কিংবা পিৎজা সস খেলে টনসিলের সমস্যা আরো বাড়তে পারে। কারণ টমেটো সস জাতীয় খাবার খুবই এসিডিক। তাই টনসিলের রোগীদের এই খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম। মসলাদার খাবার: টমেটো সসের মতোই মরিচ কিংবা রসুন যুক্ত যেকোনো খাবার টনসিলের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এই মসলাগুলো গলার মধ্যে অস্বস্তিকর কাশি ও কফের সৃষ্টি করে গলার ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এসব মসলাদার খাবার টনসিলের সমস্যা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বাদ রাখতে হবে। শক্ত খাবার: হালকা নাস্তায় পপকর্ন, আলুর চিপস কিংবা ক্র্যাকার্স বাদ দিতে হবে। এই খাবারগুলো টনসিলের সমস্যাকে দীর্ঘমেয়াদী করে তুলতে পারে। সেই সাথে গলায় ব্যথা বাড়াতে পারে। টক ফল: কমলা বা মাল্টার মতো অন্যান্য টক স্বাদযুক্ত ফলে এসিড থাকে, যা গলার প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। তাই এই খাবারগুলো না খাওয়াই উত্তম। এমনকি এসব ফলের রস খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। টোস্ট বিস্কুট: মচমচে টোস্ট বিস্কুট খাওয়ার পরিবর্তে নরম পাউরুটি খেতে হবে। চাইলে রুটি দুধে ভিজিয়ে খেতে পারেন। টনসিলের আক্রান্ত রোগীদের কফি ও মদ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এই দুটি পানীয় টনসিলের জন্য ক্ষতিকর। এসব পানীয় পরিবর্তে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।

টনসিলের চিকিৎসা

টনসিলের চিকিৎসার শুরুতে সাধারণত ব্যথানাশক ঔষধ দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে যদি টনসিলের সমস্যা হয় তাহলে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। অবশ্যই এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত খেতে হবে। টনসিলের সমস্যা ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও। কেননা অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করার পর কোর্স শেষ না করলে পরবর্তীতে আবারো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি কিডনির সমস্যাও হতে পারে। আগে টনসিলের সমস্যায় অস্ত্রোপচার করা নিয়মিত ঘটনা ছিল। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসারা পরিস্থিতি বুঝে টনসিলের অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। বিশেষ করে একজন মানুষ যদি বছরে ৭ বার অথবা বছরে ৩ বার করে টানা ৩ বছর টনসিলের সমস্যায় আক্রান্ত হন তাহলে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন৷ কিন্তু টনসিল যেহেতু আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই অপ্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। যদি অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কোনো সমাধান না থাকে তাহলে ভালো কোনো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উত্তম। বর্তমানে টনসিলের অপারেশনের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে থেকে সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি বেছে নেওয়া ভালো৷ টনসিলের সমস্যায় অস্ত্রোপচার শেষ চিকিৎসা। সাধারণত এই সমস্যায় অস্ত্রোপচার করার হার খুবই কম। তাই টনসিল হলে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

টনসিল প্রতিরোধ

টনসিলেল সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য এর প্রতিরোধ করতে হবে। টনসিল প্রতিরোধ করার জন্য দিনে কয়েকবার হাত পরিষ্কার করতে হবে। নিজের খাবার, পানীয় বা অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্রকে অন্যকে ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত না। এছাড়া যারা টনসিলের সময় ভুগছেন তাদের থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। Source: https://www.healthline.com/health/home-remedies-for-tonsilitis#warm-tea-and-honeyhttps://www.webmd.com/oral-health/tonsillitis-symptoms-causes-and-treatments#1https://www.everydayhealth.com/tonsillitis/home-remedies-fast-recovery/
আপনার পছন্দের লেখাগুলো নিয়মিত পেতে ইমেইল দিয়ে এখনি সাবস্ক্রাইব করুন।
সর্বশেষ পোস্টগুলো
আমার ওজন কমানোর গল্প

আমার ৩৪ কেজি ওজন কামানোর কথা

home remedies for insomnia

অনিদ্রা দূর করার উপায় । ১০ টি ঘরোয়া ঔষধ

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আঁচিলের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা

আমার ওজন কমানোর খাবার তালিকা বা ডায়েট চার্ট

অতিরিক্ত ওজন কমানোর ঔষধ

ওজন কমানোর প্রাকৃতিক ঔষধ

ওজন বাড়ানোর খাবার তালিকা

কফ কাশির প্রাকৃতিক ঔষধ

কফ বা কাশির প্রাকৃতিক চিকিৎসা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

কোষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা

গরম পানি খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা

খুশকি দূর করার উপায়

ঘরে বসে খুশকি দূর করার সহজ ১০টি উপায় । খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক শ্যাম্পু

চুল পরা বন্ধের উপায়

চুল পড়া বন্ধের প্রাকৃতিক ঔষধ 

দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়

দ্রুত ওজন বারানোর উপায়

বমি দূর করার উপায়

বমি দূর করার উপায় | বমি হলে করনীয়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানোর ৯ টি সহজ উপায়

দ্রুত ওজন কমানোর খাবার তালিকা

মাসে ১০ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট




Categories