বমি মানবদেহের একটি বিরক্তিকর সমস্যা বা রোগ। এটা কোন মারাত্মক রোগ বা স্বাস্থ্য ঝুঁকি না। তবে বমি হলে কি করনীয় এটা না জানলে অনেক সময় বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।
তথ্য সূচী দেখুন
Toggleশিশু থেকে বৃদ্ধ সবার এই রোগ হতে পারে। বমি দূর করতে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে আপনার হাতের কাছে থাকে বিভিন্ন কিছু দিয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা করুন।
নানা কারণে বমি বা বমি বমি ভাব হতে পারে। অধিকাংশ সময় শরীরের সাময়িক প্রতিক্রিয়ার কারণে বমি হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত মদ পান করা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেট খারাপ, আবেগজনিত চাপ (Emotional Stress), গর্ভাবস্থায়, মাথা ঘোরা (Motion Sickness) এসব কারণে বমি হয়।
বমি হলে কি করনীয় ?
বেশি বেশি পানি পান করুনঃ প্রতিবার বমির সাথে সাথে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। এতে পানি স্বল্পতাজনিত রোগ হওয়ার আশংকা দেখা দিতে পারে। তাই বমি হলে একটু পর পর পানি পান করুন। বমি হওয়ার ফলে দেহ থেকে প্রাকৃতিকভাবে ব্যক্টরিয়াগুলো চলে যায়। বার বার পানি খাওয়ার ফলে সেগুলো দেহ থেকে খুব দ্রুত বের হয়।
দ্রুত ব্যবস্থা নিনঃ বমি একটি রোগ। এটাকে ছোট করে দেখা ঠিক হবে না। তাই বমি হলে দ্রুত এর প্রতিকার শুরু করুন। বিশেষকরে ছোট শিশুদের বমি হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বমির ভাব অনুভূত হলে খুব অসস্থি লাগে। বমি চলে আসলে সেটাকে কোন ভাবেই আটকে রাখবেন না। কেননা বমির মাধ্যেমে দেহের কোন খারাপ কিছু শরীর থেকে দূর হয়ে যায়। আর বমি করার বিরক্তির চেয়ে বমি আটকে রাখা আরো বিরক্তিকর।
বমির প্রাকৃতিক চিকিৎসা
সব ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি বমির প্রতিষেধক থাকলেও বমির জন্য সাধারণত কেউ ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। অনেকে লজ্জা করে ডাক্তার দেখায় না। চাইলে ঘরে বসেই খুব সহজে বমির চিকিৎসা করা যায়। এর জন্য আপনাকে খুব কঠিন কোন কিছু করতে হবে না। তাহলে দেখে নেই ঘরে বসে কি কি উপায়ে বমির চিকিৎসা করা যায়।
১। আদা দিয়ে বমি দূর করুনঃ আদা অতি উপকারি একটি ভেষজ। এটা সব সময় খুব সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়। এটি পেটের যে কোন সমস্যার জন্য খুব উপকারি। বমির উদ্রেক হলে একটি আদা নিয়ে কুচি কুচি করে কাটুন অথবা ছেঁচুন। এক গ্লাস পানিতে সেটি ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই আদা ভেজানো পানি খেয়ে ফেলুন। এতে খুব দ্রুত বমি চলে যাবে।
২। পুদিনা পাতাঃ বমি তাড়াতে পুদিনা পাতা অনেক কার্যকরী। বমি বমি ভাব অনুভূত হচ্ছে? সাথে সাথে ২-৩ টি পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে চুষতে থাকুন। পুদিনা পাতা খাদ্যনালী এবং পাকস্থলীর যেকোন পীড়া দূর করতে সক্ষম। যাদের যাত্রাপথে বমি হয়, তারা সাথে পুদিনা পাতা রাখুন।
৩। বমির চিকিৎসায় লবঙ্গঃ লবঙ্গ ডায়রিয়া, বদহজম এবং বমির অব্যর্থ ঔষধ। এক টেবিল চামচ লবঙ্গ এক কাপ পানির সাথে চুলায় দিন। ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে চুলায় রাখুন। বমি হওয়ার সাথে সাথে সেটা চায়ের মত করে পান করুণ। সুগন্ধিযুক্ত লবঙ্গ বমি তাড়াতে খুব কার্যকরী।
৪। দারচিনী দিয়ে বমির ভাব দূর করুনঃ বমির ভাব দূর করার জন্য দারচিনী অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। বদহজমের কারণে বমি হলে, দারচিনী বমি সমস্যা দূর করার পাশাপাশি হজমক্রিয়াকেও শক্তিশালী করেন। আধা টেবিল চামচ দারচিনীর গুড়া এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তারপর চায়ের মত করে পান করুন।
৫। পেয়াজের রস পানে বমি দূর হয়ঃ বমি আসলে সাথে সাথে আধা টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস পান করুন। বমির ভাব দূর হবে। পেঁয়াজের রসের সাথে আদার রস মেশাতে পারলে এটা দারুণ কার্যকরী হবে এবং দ্রুত বমি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
৬। বমি তাড়াবে ভাতের ফ্যানঃ ভাত রান্নার সময় চাল সিদ্ধ হলে তখন অতিরিক্ত পানি ফেলে দেয়া হয়। এই পানি বমির চিকিৎসায় অনেক উপকারি। বিশেষকরে গ্যাস্ট্রিকজনিত বমি দূর করতে এটা খুবই সহায়ক।
৭। লেবুর রসঃ লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেলস আছে। যা একবার পান করার সাথে সাথে বমি দূর করতে পারে। লেবু রসের ভিটামিন সি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণগুলো বার বার বমি হওয়ার ফলে শারীরিক দুর্বলতাও দূর করতে কার্যকরী।
৮। ভিনেগার ও মধুঃ মধুর নানা উপকারিতার কথা সবাই জানে। কিন্তু ভিনেগারের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে বমি দূর হয় এটা ক’জন জানে। ভিনেগার ও মধুর মিশ্রণ পাকস্থলীকে ঠান্ডা রাখতে এবং খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত সমস্যা দূর করতে সক্ষম। এক গ্লাস পানির সাথে এক টেবিল চামচ ভিনেগারের ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন।
৯। বমির চিকিৎসায় জিরাঃ জিরা অনেক উপকারি মসলা। বদহজম জনিত বমি দূর করতে জিরার তুলনা নেই। পাশাপাশি এটা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক কার্যকরী। এক কাপ গরম পানির সাথে আধা টেবিল চামচ জিরা মিশিয়ে পান করুন। পানি ফুটানোর সময় জিরা দিয়ে ফুটিয়ে পান করতে পারেন।
১০। এলাচ ও মধুঃ ২-৩টি এলাচ ফাটিয়ে এক কাপ পানির সাথে ফুটিয়ে নিন। একটি গ্লাসের মধ্যে গরম পানি এবং বাকি অংশ ঠান্ডা পানি দিয়ে সাথে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই পানি পান করলে সাথে সাথে বমি দূর হবে।
বমির সাথে শরীর থেকে অনেক পুষ্টিগুণ চলে যায়। তাই বমি ভাল হওয়ার সাথে সাথে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ চিনি এবং এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান।
সর্বশেষ পোস্টগুলো
Categories
Author
-
একজন ওয়েব অন্ট্রাপ্রেনিয়ার, ব্লগার, এফিলিয়েট মার্কেটার। ২০১২ সাল থেকে অনলাইনে লেখালেখি নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৫ সালে সঠিক ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ৩৪ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
No comment yet, add your voice below!